কাদা ছোড়াছুড়ি না করে দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘সংক্রমণে করোনা কাউকে করুণা করবে না। কাদা ছোড়াছুড়ি নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থে সরকারের প্রতি সহযোগিতা করুন, দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। করোনা মোকাবেলায় ঐক্যই হবে আমাদের মূল শক্তি।’
মঙ্গলবার (১৯ মে) ওবায়দুল কাদের তাঁর সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত আনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
করোনার এ সংকটে বিএনপিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনা মোকাবিলায় ঐক্যই হবে আমাদের মূলশক্তি।
করোনা সংক্রমণকালে ঈদে মানুষের ঘরমুখী হওয়ার প্রবণতা বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার এই সংকটকালে ঈদকে সামনে রেখে মানুষ দলবদ্ধ হয়ে গ্রামমুখী হচ্ছে, যা অত্যন্ত বিপর্যয় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, ঈদে বাড়ি ফিরতে গিয়ে মানুষ নিজে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবে, তেমনি আসে পাশে মানুষকে হতে গ্রস্থ করবে। জেনেশুনে এমন ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি অনাকাঙ্খিত এতে নিজেরা যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবো তেমনি আমরা আশপাশের অন্যদের জীবন ও জীবিকায় হুমকি ডেকে আনবো। তাই, আবারো অনুরোধ করবো যেখানে যারা যে অবস্থানে আছেন এখানে থেকেই আপনারা ঈদ উদযাপন করুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, স্থানান্তর আপাতত বন্ধ রাখুন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতায় আমরা এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠব ইনশাল্লাহ।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফান প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, প্রাণঘাতী এই সংকটকালে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এই সাইক্লোন বুধবার বিকেল নাগাদ উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। এটি সিডরের চেয়েও বিধ্বংসী হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড়ে সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য আঘাত এবং ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আশ্রয় গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে আশ্রয় গ্রহণকারীদের মাঝে মাস্ক বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
উপকূলীয় এলকার আওয়ামী লীগ নেতাদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি উপকূলীয় জেলার জনসাধারণকে সাহসের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা অনুরোধ করছি পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি এবং মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশংকা প্রকাশ করেছে, করোনা সংকট দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তাই, আসন্ন কঠিন সময় মোকাবেলায় আমাদের সকলকে সমন্বিত ও সর্বাত্বক প্রস্তুতি নেওয়ার বিকল্প নেই।
শ্রমিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের বকেয়া বেতন পরিষদের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদের প্রাক্কালে বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করার জন্য আমি মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি করোনাজনিত এই সংকটে ফ্রন্টলাইনে যুদ্ধ করছে গণমাধ্যমকর্মীরা। যে সকল গণমাধ্যম মালিকরা এখনও সাংবাদিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেননি তাদের প্রতি অনুরোধ করছি সাংবাদিকদের বেতন ভাতা ঈদের আগে পরিশোধ করুন।
Leave a Reply