করোনা সন্দেহে পোশাক শ্রমিকের মরদেহ তিস্তা নদীতে, দু’দিন পর উদ্ধার করোনা সন্দেহে পোশাক শ্রমিকের মরদেহ তিস্তা নদীতে, দু’দিন পর উদ্ধার – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : hafija khan : hafija khan
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

করোনা সন্দেহে পোশাক শ্রমিকের মরদেহ তিস্তা নদীতে, দু’দিন পর উদ্ধার

Reporter Name
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১৬ জুন, ২০২০
  • ২৩৩ সময় দর্শন

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে এক পোশাক শ্রমিকের মরদেহ তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেলে জানাজা শেষে পাটগ্রাম পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আদিতমারী ও পাটগ্রাম থানা পুলিশ লাশটি দাফন করেছে।

মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তার (২২) বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার মেয়ে। জানা গেছে, নিজ় গ্রামের বাড়িতে মেয়ের লাশ দাফন হবে না; তাই এক অ্যাম্বুলেন্সে ড্রাইভারের সাথে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেছিলেন। মেয়ের মৃতদেহ দাফনের জন্য চুক্তির টাকাও পরিশোধ করেছিলেন সেই পিতা। কিন্তু মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সের চালক দাফন না করেই ফেলে দেন তিস্তা নদীতে। দুই দিন পর সেই মৃতদেহ তিস্তার পানিতে ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। আদিতমারী থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরিচয় শনাক্ত হবার পর পিতার কাছে পুনরায় লাশ দাফনের দায়িত্ব এসে পড়ে। কিন্তু ঘটনা জানতে পেরে পুলিশেই দায়িত্ব নেয় লাশ দাফনের।

আদিতমারী থানা পুলিশ পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের (২২) মরদেহ রবিবার সন্ধ্যায় তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করে। মৌসুমী একই উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী। পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, সরকারের হাট এলাকার আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমানের সাথে ছয় মাস আগে বিয়ে হয় পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে একাই গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতে চলে যান মৌসুমী। বৃহস্পতিবার (২১ মে) অসুস্থতা অনুভব করলে একটি ট্রাক যোগে পাটগ্রামে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। রংপুরের তাজহাট এলাকায় পৌঁছলে ট্রাক চালক তাকে মৃত দেখে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে তাজহাট থানা পুলিশ মৌসুমীর মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। পরদিন শুক্রবার খবর পেয়ে মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা তাজহাট থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন।

এরপর বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাতকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানিয়ে নিজ এলাকায় মরদেহ দাফনের অনুমতি চান। কিন্তু ওই মরদেহ করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে পরিবার ও মরদেহবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন চেয়ারম্যান। এমনটাই অভিযোগ করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা।

এই ঘটনার পর মেয়ের মরদেহ দাফন করতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকার একজন লাশবাহী গাড়ি চালকের সাথে ৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেন। চালক মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়ে গোলাম মোস্তফাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে মরদেহটি তিস্তা নদীতে ফেলে দেন। দুই দিন পরে স্থানীয়দের খবরে রবিবার (২৪মে) রাতে উপজেলার মহিষ খোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারি ব্যাগে মোড়ানো মরদেহটি উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।

সোমবার ঈদের নামাজ শেষে আদিতমারী থানা পুলিশ মরদেহটির জানাজা শেষে আদিতমারী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিতেই খবর পেয়ে পরিচয় শনাক্ত করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা। অবশেষে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় আদিতমারী থানা পুলিশ পাটগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় পাটগ্রাম পৌর কেন্দ্রীয় কবরস্থান ভোলার ডাঙ্গায় বিকেলে মৌসুমীকে দাফন করেন।

মৌসুমীর বাবা গোলাম মোস্তফা বলেন, লাশ গ্রামে নিতে দেয়নি আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত চেয়ারম্যান। বাধ্য হয়ে একজন ড্রাইভারকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছি লাশ দাফন করতে। কিন্তু সে-ও দাফন না করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে। অবশেষে আবারো মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করতে হলো আদিতমারী থানায়।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক ও দুঃখজনক। সরকারি ব্যাগে মোড়ানো মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। মৃতের পরিচয় নিশ্চিত হবার পর তার বাবার আকুতি জেনে পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুই থানা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে মরদেহ দাফন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্ত জানান, থানা পুলিশের উদ্যোগে ও পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিততে মরদেহ দাফন করা ঽয়েছে।

বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি ঘটনা শুনার সাথে সাথে থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ও লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু মেয়ের বাবা রংপুরে লাশ নেওয়ার পর আমার সাথে আর কোনো যোগাযোগ করেনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর