এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। দক্ষিণ সিটির জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। এছাড়া দক্ষিণ সিটিকে নতুন করে গড়ে তোলার কথাও বলেছেন তিনি।
সম্প্রতি একুশে টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান একুশের রাতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই নেতা। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, পুরান ঢাকাকে নতুন করে সাজাতে পরিকল্পনা রয়েছে। এ সময় তিনি পাঁচ পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন। নিচে তার পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরা হলো-
প্রথমত
আমাদের ঐতিহ্যের ঢাকা। আমাদের সেই পুরাতন ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে আমরা ঢাকার স্বকীয়তা বজায় রেখে এর রূপকে আমরা প্রস্ফূটিত করব।
দ্বিতীয়ত
আমার সুন্দর ঢাকা। সেই সুন্দর ঢাকা আমরা সবুজায়ন করব; পরিবেশ বান্ধব কার্যক্রমগুলো হাতে নিব। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, পার্ক- এগুলোর ব্যবস্থা করব। এর মাধ্যমে আমরা ঢাকার সৌন্দর্যবর্ধন করব।
তৃতীয়ত
আমার সচল ঢাকা। প্রত্যেকদিন ঢাকাবাসীর যে নাভিশ্বাস ওঠে যায় যানজটের কারণে, দৈনন্দিন কাজ করতে গিয়ে যে একটা সংগ্রাম করতে হয় গন্তব্যস্থলে যেতে- এই জায়গাটাতে আমাদের নজর দিতে হবে। এবং এখানে আমাদের সাবেক ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র প্রয়াত আনিসুল হক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। সেই বিষয়গুলো আমরা পর্যালোচনা করছি। আর সেটা ঢাকা দক্ষিণে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, সে বিষয়টা আমরা দেখছি।
এছাড়া, একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুরো যাতায়াত ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে চাই। আমার চিন্তধারাটা এরকম যে আমরা বাইরের দেশে দেখি, পুরাতন শহরের আলাদা একটি মর্যাদা সম্মান এবং সৌন্দর্য রয়েছে। সেটা আমি ঢাকার জন্য ফিরিয়ে আনতে চাই। এবং সেখানে আপনারা দেখবেন যে, অনেক রাস্তা আছে যে সেখানে কোনও যানবাহন চলে না। মানুষ সেখানে হেঁটে চলাফেরা করে। সেটাই একটা উপভোগ্য বিষয়। কিছু রাস্তা আছে, যেগুলো ধীরগতি যানবাহন চলবে। কিছু রাস্তা আছে, যেগুলো দ্রুতগতির যানবাহন চলবে। সব মিলিয়ে এমন একটি ব্যবস্থাপনা করতে হবে, যেখানে সব রকম যানবাহনই থাকবে। জনগণ যেটা পছন্দ করবে, সেটা ব্যবহার করবে। সেই জায়গায় কাজ করতে চাই। সেখানে আমার ইচ্ছা আছে যে ঘোড়ার গাড়িও চলবে; সাইকেল চালানোর আলাদা জায়গা থাকবে; মানুষ যেখানে হেঁটে যেতে চায় সেখানে সে হেঁটে যাবে। এরকমই একটি ব্যবস্থাপনা করব। এভাবে আমরা সচল ঢাকা প্রতিষ্ঠা করব।
চতুর্থত
আমার সুশাসিত ঢাকা। এখানে একটি বিষয় আনতে চাই, পুরাতন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী পঞ্চায়েত ব্যবস্থাটাকে কায়েম করতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে অনেক সামাজিক ব্যাধিগুলোকে আমরা দূর করতে পারি। সর্বোপরি, আমরা যে জায়গাটায় নজর দিতে চাই, সেটা হলো- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে আমরা একটি দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
পঞ্চমত
যেটা আমাদের মূল লক্ষ্য হলো- উন্নত ঢাকা। এই উন্নত ঢাকার জন্য আমরা একটি মহা পরিকল্পনা করব। প্রথম নব্বই দিন আমাদের মূল কাজ হবে ঢাকাবাসী জনগণের মৌলিক নাগরিক সেবাগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া। এবং এই নব্বই দিনের মধ্যেই আমরা একটা মহা পরিকল্পনা করব। এরই মাঝে আমরা অনেক নগর উন্নয়নবিদদের সঙ্গে আলাপ করছি; বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করছি। তারা আমাদেরকে সাহায্য করছে। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত ঢাকা প্রতিষ্ঠা করব।
Leave a Reply