কেজিপ্রতি ২৩ টাকা দরে ৩ থেকে ১৫ হাজার টন পর্যন্ত পিয়াজ রপ্তানির প্রস্তাব করেছে তুরস্ক। বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে দেশটি এ সুবিধা দিচ্ছে। তবে পিয়াজ ক্রয় এবং আমদানি-রপ্তানি হবে সম্পূর্ণ বেসরকারি খাতে, ব্যবসায়ী পর্যায়ে। এ নিয়ে দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঢাকার বিবেচনায় একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে আঙ্কারাস্থ বাংলাদেশ মিশন। ওই প্রস্তাবে তুরস্কের পিয়াজের স্বাদ, রং, ভেরাইটি এবং সাইজের ভিন্নতার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। আঙ্কারায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকী গতকাল সন্ধ্যায় টেলিফোনে মানবজমিনকে বলেন, তুরস্কের বাজারে পর্যাপ্ত পিয়াজ রয়েছে। ঢাকা যা চাইবে তা-ই দেয়া যাবে। বিষয়টি আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। তিনদিন আগে ঢাকায় এ সংক্রান্ত একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠিয়েছি। চাহিদাপত্রসহ আমদানি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পেলে যত দ্রুত সম্ভব শিপমেন্ট হবে। দুই দেশের অভ্যন্তরীণ ট্রান্সপোর্ট ব্যয়সহ সর্বসাকুল্যে ঢাকার বাজার পর্যন্ত তুরস্কের পিয়াজ পৌঁছাতে টন প্রতি ২৭০ থেকে ২৭৫ ডলার দাম পড়বে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমদানির পরিমাণ যত বাড়বে ব্যয় তত কমে আসবে। আঙ্কারার বাংলাদেশ মিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঢাকাকে জানিয়েছেন, তুর্কি ব্যবসায়ীদের অনেকেই বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানির আগ্রহ দেখিয়েছেন। বেশ ক’জন ব্যবসায়ী কোটেশন জমা দিতে মিশনে যোগাযোগ করেছেন। ঢাকার চাহিদাপত্র এবং সিদ্ধান্ত পেলে মিশন তুলনামূলক প্রাইস এবং উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভালো মানের পিয়াজ পাঠানোর চেষ্টা করবে। তুরস্কের বাজারে একাধিক রং, মান এবং জাতের পিয়াজ রয়েছে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, অতীতে বাংলাদেশে অল্প-বিস্তর পিয়াজ রপ্তানি করেছে তুরস্ক। বাংলাদেশের পছন্দের বিষয়টি তুর্কি ব্যবসায়ীদের কাছে অজানা নয়। তা-ই পিয়াজের স্বাদ বা মান নিয়ে প্রশ্ন নেই, বরং জরুরি হচ্ছে ঢাকার সিদ্ধান্ত পাওয়া। তুরস্কের বাজারে রপ্তানিযোগ্য পিয়াজের মধ্যে মধ্যম মানের যে পিয়াজ রয়েছে টন প্রতি তার মূল্য (পরিবহন খরচসহ) কোনো অবস্থাতেই ২৭৫ ডলারের বেশি হবে না জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, সে হিসাবে ঢাকায় পৌঁছাতে তুরস্কের পিয়াজের মূল্য পড়বে টনপ্রতি ২৩ হাজার টাকা (কেজিপ্রতি মূল্য ২৩ টাকা)। ভারতের পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের আচমকা সিদ্ধান্তে ঢাকার বাজার যেভাবে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে তুরস্কের পিয়াজ আমদানি হলে সেটি স্থিতিশীল হতে বাধ্য এমন মন্তব্য করে ওই কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, আমদানি মূল্য কেজিপ্রতি ২৩ টাকার মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সর্বোচ্চ ৫০ ভাগ মুনাফা এবং ৫ ভাগ ডেমারেজ (পচনশীল পণ্যের জন্য) ধরা হলেও খুচরা বাজারে তুরস্কের পিয়াজের মূল্য ৩৮-৪০ টাকার মধ্যে থাকার কথা। আর এটি নিশ্চিত করা গেলে অস্থিতিশীলতা তো নয়ই, পিয়াজের বাজার নিয়ে কোনো উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তাই থাকবে না।
Leave a Reply