আনোয়ার হোসেন :: বরিশাল সদর উপজেলা সাহেবের হাট শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজের ৫শত অধিক শিক্ষার্থীর পরিক্ষা বাড়িতে বসে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধান কালে দেখা গেছে, ডিগ্রী কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বাড়িতে বসে পরিক্ষা দিচ্ছে। বাড়িতে বসে পরিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষকদের এমন উদ্যোগ পরীক্ষার্থীর খাতা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে অবমূল্যায়নে করা হচ্ছে। এর কারনে এই বছর কত শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হবে, তার হিসাব নাই। এমনকি অনেক জীবন পর্যন্তও বিপন্ন হবে। তারা আরোও বলেন, একধিকে করোনার দোহাই দিয়ে ইস্কুল কলেজ বন্ধ রেখেছে। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রী দিয়েছেন অটো পাশ। তার ভিতরে কলেজ শিক্ষকদের বাড়িতে বসে পরিক্ষা নেওয়ার বিষয়টি আসলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন তারা। অভিভাবকরা মনে করেন, এই পরিক্ষার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ও পরিক্ষার খাতাকে অবমূল্যায়নের ভয়ে দিন কাটায়, তাদের সন্তানের খাতা ও পরিক্ষায় পাশ সঠিকভাবে মূল্যায়ন হবে কিনা? এইচ এসসি বোর্ড পরীক্ষা ও পরিক্ষার খাতাগুলো শিক্ষকদের কারণে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে তারা মনে করেন। অভিভাবকরা বলেন, বাড়িতে বসে পরিক্ষা না নিয়ে কলেজে বসে নেওয়া উচিত ছিলো। অভিভাবকরা আরোও বলেন, আসলে এগুলো পরিক্ষা নাম দিয়ে টাকা আত্মসাতের শিক্ষকদের নতুন কৌশল। আমাদের সন্তানদের জিম্মি করে পুড়ো বছরের মাসিক চাঁদাসহ ৯ হাজার করে টাকা নিয়েছেন শিক্ষকরা। আসলে আমরা কি বুজিনা এই নাটকীয় মূল কারন টাকা আদায় করা। তারা তো সরাসরি টাকা চাইতে পারছেনা, তাই পরিক্ষার নেওয়া ভাণ করে কৌশলে মাসিক চাদাসহ বিভিন্ন সার্ভিস চার্জ আদায় করার তাদের নানান কৌশল। কিছু কিছু অসহায় অভিভাবকরা বলেন, করোনার মধ্যে মানুষের আয় নেই পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে তার ভিতরে ছাত্র – ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এমনকি পরিক্ষা নাম দিয়ে টাকা লোভী শিক্ষকরা টাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। অনুসন্ধান কালে আরোও দেখা যায়, অনেক শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পরিক্ষা দিতে পারছেনা। একজন শিক্ষার্থী নার্সারী-প্লে ক্লাস থেকে শুরু করে ১৪ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম, সাধনা করে এইচ. এস.সি পরীক্ষা দেয়, তার ১৪ বছরের প্রতি মিনিটের সুফল নির্ভর করে পরীক্ষার ফলাফলের উপর। কিন্তু কোন কারণে পরীক্ষকের অবহেলা, গাফিলতি বা সঠিক নিয়ম না মানার কারণে পরিক্ষা ও পরীক্ষার খাতা অবমূল্যায়ন হলে ঐ শিক্ষার্থীর যে ক্ষতি হয় সেটা কোনোভাবেই পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছা এক শিক্ষার্থী বলেন, আসলে একধিকে অটো পাশ অন্যদিকে বাড়িতে বসে পরিক্ষা দিয়ে পাশ করে চাকুরীর জন্য গেলে কতো যে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে সেটা আল্লাই ভালো জানেন। তিনি আরোও বলেন, ২০২০ সালের পরিক্ষার পাশ দেশের চাকুরীর ক্ষেত্রে সারা জীবন সবাইর কাছ প্রশ্ন মুখী হয়ে থাকবে। আমাদের ভবিষ্যৎ কি হবে?
একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, যেখানে সরকার অটো পাশের ঘোষণা দিয়েছেন। সেখানে আবার বাড়িতে বসে শিক্ষার্থীর পরিক্ষা নেওয়া এবং তাদের খাতাবা কাড়া দেখবে। শিক্ষকদের টাকা দরকার মানুষে ঘরবাড়ি বিক্রি করে হলেও ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যতের চিন্তা করে টাকা দিবো। তবে তাদের এমন ভুমিকায় আমাদের বিপদ। বর্তমানে পরিক্ষার্থী বাসায় বসে পরিক্ষা দেওয়া জন্য শিক্ষকদের ৯ হাজার করে টাকা দিতে হয়। এটা একেবারেই অপ্রতুল।
শিক্ষাই যেখানে জাতির মেরুদন্ড সেখানে অপরিকল্পিত অনিয়মে পরিক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। তবে সরকারের অটো পাশের ঘোষণাকে কিছু অসাধু শিক্ষকরা ব্যবহার করে নিজেদের সার্থ হাচিল করছে বলে অভিযোগ করেছেন। এতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভাবনার বিষয়। এরপরেও শিক্ষকদের অবহেলায় যদি থাকে তাহলে ঐ শিক্ষার্থীর ও অভিবাবকদের সান্তনা পাওয়ার আর কিছুই থাকে না। তাছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে তাচ্ছিল্যভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।
অনিয়মের বিষয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মসিউর রহমান পত্রিকার এক সম্পাদকে মোবাইল ফোনে বলেন, আমাদের ডাইরেক্টর বলছে ছাত্রদেরকে পড়ালেখার মধ্যে আনার জন্য প্রশ্ন যদি তাদেরকে দেওয়া হয় এবং তারা বাড়িতে বসে যদি লেখে তাহলে ভালো হয়। সম্পাদক: এটা কি আপনাদের বোর্ডের সিধান্ত। না এই সিধান্ত আমাদের ডাইরেক্টরদের সিধান্ত। শুধু আমাদের কলেজে এমন তা নয়, হাতেম আলী কলেজ, উদায়ন ইস্কুল, চাখার কলেজসহ বহু কলেজে এই ভাবেই পরিক্ষা নেওয়া হয়েছে। আর এই বিষয়গুলো নিয়ে কোথাও কোনও আলাপআলোচনা নেই কিছু বাটপার টাউটার সাংবাদিক আছে তারা এগুলো করেন। সম্পাদক: শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড আপনাদের শিক্ষকের মধ্যে টাউট বাটপার শিক্ষক আছে। তা ঠিক গত বছর আমাদের কিছু ছাত্র পরিক্ষার সময় চাঁদা চেয়েছিলো। আমি তাদেরকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছি আজ তারাই এমন করছে। সম্পাদক: পরিক্ষা বাড়িতে বসে নেওয়ার সিধান্ত আপনাদের মেনে নিলাম, কিন্তু ৯ হাজার টাকা করে আদায় করা কি অনিয়ম হলো না। এখন করোনাকালিন সময়ে মানুষ খুব অভাবে আছে এর মধ্যে এতো টাকা দিয়ে পরিক্ষা দেওয়া সমার্থক কি সবাইর আছে। কোনো উত্তর দেয়নি অধ্যক্ষ মসিউর রহমান। সম্পাদক: যাহারা এতোগুলো টাকা দিতে পাড়িবেন না, তাদের অবস্থা কি হবে। অধ্যক্ষ নিরব? কিছু ক্ষন পরে অধ্যক্ষ সসম্পাদকে চার দাওয়াত দিলেন।
দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুছ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এমনকি আমাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বাসায় প্রশ্ন দিয়ে পরিক্ষা নেওয়ার কোনও অনুমতি নেই। কেউ যদি নিয়ে থাকে তাহলে তারা বেআইনি ভাবে পরিক্ষার নাম দিয়ে টাকা বাণিজ্য করছেন। আপনারা নিউজ করে ওই সকল পরিক্ষা বাণিজ্য শিক্ষকদের মুখোশ মানুষের সামনে তুলে দরুন।
Leave a Reply