প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক, ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘করোনার এই মহামারি ক্রান্তিকালে গণমাধ্যমকর্মীরা ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা। তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করে জনগণকে সচেতন করার কাজটি ভালোভাবেই করে আসছেন। এরই মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সাংবাদিক মারাও গেছেন। অথচ তাদের বিষয়টি তেমনভাবে কেউ ভাবছে না। আমি মনে করি, বাংলাদেশে গণমাধ্যমে কর্মরতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল এবং ঝুঁকি ভাতাসহ প্রণোদনা অবশ্যই দেওয়া উচিত।
আজ রোববার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গণমাধ্যম ও বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে অধ্যাপক আবদুল্লাহ এসব কথা বলেন।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সেমিনারে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য ডা. আনোয়ার হোসেন খান, এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মো. এখলাসুর রহমান, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা তাশিক আহমেদ প্রমুখ।
অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আরো বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংবাদমাধ্যমে কর্মরতদের যেন টিকার আওতায়ও আনা হয়। বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ চিকিৎসার অব্যাবস্থাপনা যদি থাকে সেগুলোকে তুলে ধরার পাশাপাশি চিকিৎসকদের ভালো ভূমিকাগুলোও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরুন। নচেৎ মানুষ বিভ্রান্ত হবে।‘
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাস্কের দাম, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা রোধে ব্যবহৃত পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বেড পাওয়া যাচ্ছে না। যারা একবার করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তারা বুঝতে পারছেন যে করোনার চিকিৎসা কত ব্যয়বহুল। কী কারণে করোনার চিকিৎসা এতো ব্যায়বহুল তা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।‘
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান আরো বলেন, করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলার সময় আর যেন স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি নিয়ে কোনো সংবাদ শুনতে না হয়। আর যেন দেখতে না হয় করোনা আক্রান্ত রোগী নিজেই হাসপাতালে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিচতলা থেকে কাঁধে করে উপরে নিয়ে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলোর পাশাপশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনার টেস্ট জালিয়াতিসহ স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজরা এখন আদালতের কাঠগড়ায়। ভবিষ্যতে মানুষের জীবন নিয়ে এই ধরনের ছিনিমিনি খেলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক ও দৃশ্যমান বিচার করা হলে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আরো বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আমরাই বেসরকারিভাবে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল চালু করি। যদিও শুরুতে চিকিৎসা প্রদানে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছিলো। তবে এখন আমরা অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও নির্দেশনায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমরা সক্ষম হব ইনশা আল্লাহ।‘
এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, করোনায় মৃত্যুহার কমাতে বাংলাদেশের হাসপাতাল তথা চিকিৎসকের ভূমিকা অপরিসীম। তারা জীবন বাজি রেখে চিকিৎসাকাজে নিয়োজিত ছিলো বলেই এদেশে করোনায় সেভাবে প্রাণহানী ঘটেনি। বড় আশার কথা যে, এখন তারা এই চিকিৎসাকে অনেকটাই তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পেরেছেন।‘
Leave a Reply