নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ’র বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বহুমুখী দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন চিকিৎসকরা। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৯ চিকিৎসক বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক এবং বরগুনা সিভিল সার্জনের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।তার বিরুদ্ধে চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আটকে রেখে অর্থ আদায়, পরিচ্ছন্নতাকর্মীর নামে বিল ভাউচার এবং প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অক্সিজেন সিলিন্ডার নিজের বাসায় রাখারও অভিযোগ করা হয় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
চিকিৎসকদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা আটকে রেখে অর্থ আদায় করেন। তিনি উন্নয়ন ফান্ড নামে একটি ফান্ড তৈরি করে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জোর করে টাকা তোলেন। এর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আছে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আত্মসাৎ, ঘুষ গ্রহণ, ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে অর্থ লোপাটের অভিযোগ।
অভিযোগে আরও বলা হয়, জরুরি বিভাগের চারটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিজের বাসায় রেখেছেন আবুল ফাত্তাহ। আন্তবিভাগে ভর্তি হওয়া রোগীদের জন্য রান্না করা খাবার থেকে নিজের লোকজনের জন্য প্রতিদিন খাবার সরিয়ে রাখেন এ চিকিৎসা কর্মকর্তা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সচালক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের ৫৮ হাজার ৬০০ টাকার দুটি বিল ভাউচারে গত ২ জুন আমার স্বাক্ষর নিয়েছেন, অথচ আমাকে কোনো টাকা দেননি ফাত্তাহ স্যার। শেষ বেতনের প্রত্যয়নপত্র (এলপিসি) নিতে আমি বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর দিয়েছি।’
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভিযোগকারী একাধিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের তিন মাসের বেতন আবুল ফাত্তাহ আটকে রেখেছেন। বেতন আটকে তিনি হয়রানি করছেন। ডরমেটরিতে থেকেও আমাদের বাড়ি ভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকারও বেশি দিতে হচ্ছে। যা আমাদের ওপর অবিচার।’
এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে আবুল ফাত্তাহ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘চিকিৎসকদের বেতন আটকে রাখা যায় না, তারা অনলাইনে বেতন পেয়ে যান।’
বাড়ি ভাড়া কাটা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওটা ডরমেটরির ভাড়া। আর হাসপাতালে যে উন্নয়ন হয়েছে তার অনেক টাকা আমার পকেট থেকেও গেছে। আমার বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস বরিশালটাইমসকে জানান, এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন, তবে বিষয়টি বরগুনার সিভিল সার্জন দেখবেন।
বরগুনার সিভিল সার্জন মারিয়া হাসান বলেন, ‘পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ’র বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply