অনলাইন ডেস্কঃঃ পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করে লাভের টাকায় বাবা-মাকে ফ্রিজ ও বাড়ি উপহার দিয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) খাদ্যপ্রযুক্তি ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও রাজশাহীর পবা থানার পাইকপাড়া গ্রামের মুন্তাজ আলী এবং রেণুফা বেগম দম্পতির তৃতীয় সন্তান পুষ্টিবিদ মুরাদ।
জানা গেছে, করোনার সময়ে স্নাতক শেষ করে এক দিনও বসে থাকেননি মুরাদ। পুষ্টিবিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় আগে থেকেই তার স্বপ্ন ছিল নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কাজ করার। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে গেল বছরের জুনে পুরোদমে কাজ শুরু করেন রাজশাহীর আম নিয়ে। প্রথম বছরই অনলাইনে ৬ হাজার কেজি আম বিক্রি করেন তিনি। অন্য আম ব্যবসায়ীদের মতো ক্রেতাদের থেকে অগ্রিম টাকা নেননি মুরাদ। আম হাতে পেয়েই ক্রেতারা তাকে টাকা দিত। কোনো কারণে আম খারাপ হলে আবার নতুন করে আম পাঠাতেন তিনি।
প্রথম বছরের আম বিক্রি থেকে পাওয়া লাভের টাকা খরচ না করে মুরাদ দুটি গরু ক্রয় করেন। পাশাপাশি শুরু করেন মাটির তৈরি তৈজসপত্রের ব্যবসা। অনলাইনে নয় মাসে সারা দেশে প্রায় ৬৩০টি পানির জার বিক্রি করেন তিনি।
ক্রেতাদের বিশ্বস্ততা অর্জন করে এরপর আবার চলতি বছরে এসে মাত্র ৩৩ দিনে ২৩ টন আম বিক্রি করেছেন তিনি। শুধু করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে মোট ৩৫ লাখ টাকার আম ও মাটির তৈজসপত্র বিক্রি করেছেন পুষ্টিবিদ মুরাদ। আর এসব বিক্রির লাভের টাকা দিয়েই বাবা-মাকে ফ্রিজ ও বাড়ি উপহার দিয়েছেন তিনি।
পুষ্টিবিদ মুরাদ পারভেজ বলেন, ‘গত বছর আম বিক্রি করে দুটি গরু কিনেছিলাম। গরু দুটি এবার অনলাইন বিজনেস প্ল্যাটফর্ম উইতে বিক্রি করে লাভের কিছু অংশ দিয়ে বাবা-মাকে ফ্রিজ উপহার দিয়েছি। আর এ বছরের আম বিক্রির লাভের টাকায় মাকে বাড়ি উপহার দিচ্ছি।’
বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের ঈদ আমার জীবনের সেরা ঈদ। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমার গাইড কেনার জন্য কাঁসার কিছু আসবাবপত্র ছিল সেগুলো বিক্রি করেছিলেন মা। গরুর দুধ বিক্রি করেও মা পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন। আমার বাবা অত্যন্ত মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও অভাবের কারণে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিতে পারেননি। দরিদ্র্যতার মধ্যেও বাবা চেয়েছেন আমি বড় হই। এখন তাঁদের জন্য কিছু করতে পারাটাই আমার জীবনের বড় সার্থকতা।
Leave a Reply