অভিযুক্ত পিতা বাদল মিয়া
অনলাইন ডেস্কঃঃ তিন সন্তান এর মিল খুজে না পেয়ে এক সন্তাঙ্কে হত্যা করেছে নিজ পিতা। সায়মন (৯), আয়মন (৭) ও নাঈম (৪) তিন ভাই। এর মধ্যে সায়মনের চেহারা ও আচার-আচরণে অন্য দুই সন্তানের সঙ্গে মিল পাচ্ছিলেন না বাবা বাদল মিয়া। অবশ্য সায়মনের জন্মের পর থেকেই বাদল মিয়ার সন্দেহ, সন্তান তাঁর কি না। প্রায় ৯ বছর জমিয়ে রাখা ওই সন্দেহের সমাপ্তি তিনি ঘটালেন ছেলেকে হত্যার মধ্য দিয়ে।
ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। আদালত ও পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বাদল মিয়া হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন। রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে বাদল মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে পুলিশ শনিবার সন্দেহমূলকভাবে বাদল মিয়াকে আটক করলে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের একটি ধানি জমি থেকে শনিবার সকালে মো. সায়মন (৯) নামে এক শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সায়মন সুহিলপুর গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র। বাবার সঙ্গে সে ধান কাটতে গিয়ে ফিরে আসার পথে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় বলে প্রথমে জানাজানি হয়।
বাদল মিয়া প্রথমে জানান, সকালে সায়মন তার সঙ্গে ঘাস কাটতে বের হয়। কিছুক্ষণ পর সায়মন ঘাস কাটবে না জানিয়ে বাড়ির পথে চলে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পরেও সায়মন বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হলে অনেক খোঁজাখুঁজি করে ওই গ্রামের নদ্দাপাড়ার একটি ধানি জমি থেকে সায়মনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, বিয়ের পাঁচ মাস পর প্রবাসে চলে যান বাদল মিয়া। এর দুই মাস পর তার স্ত্রী পুত্র সন্তান জন্ম দেন, নাম রাখা হয় সায়মন।
কিন্তু সাত মাসে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঘটনায় সন্দেহ পোষণ করে বাদল। দেশে এসে এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহের সৃষ্টি হয়। পরে বাদল আরো দুই সন্তানের বাবা হন। সন্তানরা বড় হতে হতে বাদল সন্দেহ করেন, সায়মনের সঙ্গে আয়মন ও নাঈমের চেহারার মিল নেই। অমিল আচারণেও। সব মিলেয় তার সন্দেহ প্রবল আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে বাদল জানতে পারেন, বশির নামে একজনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর পরকীয় সম্পর্ক ছিলো।
এক পর্যায়ে সায়মনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন বাদল। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে পরিকল্পিতভাবে জবাই করে সায়মনকে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরও বাদল মিয়ার মধ্যে কোনো ধরণের অনুশোচনা না থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ বাদল মিয়াকে গ্রেপ্তার করলে হত্যা রহস্য উন্মোচন হয়।
Leave a Reply