নিজস্ব প্রতিবেদক:: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেতে ইউপি সদস্যকে ঘুষ না দেওয়ায় মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে উপহারের ঘর বরাদ্দ পাওয়া ভুক্তভোগীরা। আজ সোমবার (২৬ জুলাই) বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ ভবনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। এতে বক্তব্য রাখেন ওই আবাসনের সাধারণ সম্পাদক মো. আছাদুল ইসলাম, তার স্ত্রী রুমা বেগম, মো. ছালেক হাওলাদারসহ ওই আবাসনের বাসিন্দারা।
এর আগে গতকাল রোববার (২৫ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে বসেই আছাদুলকে মারধর করেন ওই ইউপি সদস্য। এ সময় তারা উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোহাসিন হাওলাদার কর্তৃক ওই ওয়ার্ডের ওমেদপুর সরকারি আবাসনের ঘর দেওয়ার নামে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে আদায়ের অভিযোগ করেন। এছাড়াও ওই আবাসনের লোকজনের কাছ থেকে তার বাহিনী কর্তৃক বিভিন্নভাবে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ করা হয়। আর ঘুষ না দেওয়ায় তিনি ও তার বাহিনীর কর্তৃক মারধরসহ শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ওই আবাসনের সাধারণ সম্পাদক মো. আছাদুল ইসলাম মাঝি জানান, ইউপি সদস্য মোহাসিন হাওলাদার ওই আবাসনের সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন। টাকা দিতে না পারলে তাদের নামে ঘর দেননি।
এর আগে তিনি (আছাদুল) মেম্বারের লোক (কর্মী) হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু সম্প্রতি আছাদুল মেম্বারের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় এবং আরও মামলা দেওয়াসহ তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দেন। গতকাল রোববার (২৫ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সামনে বসেই আছাদুলকে মারধর করেন ওই মেম্বর।
সোমবার (২৬ জুলাই) সকালে ওই আবাসনের লোকজন নিয়ে মানববন্ধন করতে ট্রলারে করে ইন্দুরকানীতে রওনা দিলে ওই মেম্বারের সন্ত্রাসী বাহিনীর আব্দুল, শাহীন, হাসানসহ ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী আছাদুল ও তার স্ত্রী রুমা বেগমসহ ছালেক হাওলাদারকে মারধর করে। এ সময় হামলাকারীরা মানববন্ধনে আসতে ব্যবহৃত ট্রলার আটকে দেয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মাৎ লুৎফুন্নেসা খানম সাংবাদিকদের জানান, সেখানে কোনো মারামারি হয়নি। উচ্চ স্বরে বাক্য বিনিময় হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোহাসিন হাওলাদার তার বিরুদ্ধে আনা চাঁদাবাজির সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সামনে ইউপি নির্বাচন তাই কেউ আমার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এমন অভিযোগ তৈরি করছেন।
ইন্দুরকানী থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, রোববার (২৫ জুলাই) সেখানে মারামারির খবর পেয়ে দুইবার পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আজ সেখানে আমি (ওসি) গিয়ে আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ও মিটিং করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। এখনও কারও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই আবাসনের সাধারণ সম্পাদক আছাদুল ইসলাম মাঝি এর আগে ওই ইউপি সদস্য মোহাসিন হাওলাদারের লোক ছিলেন। এ সময় আছাদুল ইউপি সদস্য মোহাসিনের পক্ষ হয়ে ওই আবাসন থেকে ও ঘর দেওয়ার নামে চাঁদাবাজি করতেন। সম্প্রতি আছাদুল ইসলামের ইউপি সদস্যের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হলে তাদের মধ্যে বিরোধে তৈরি হয়।
Leave a Reply