ভোলার চরফ্যাসনের শশীভূষণ বাজারের আড়ৎ থেকে সামদ্রকি মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞার বিপরিতে বিতরণকৃত জেলেদের প্রাপ্ত ৫০০ কেজি সরকারী চাল জব্দ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে শশীভূষণ বাজারের মো. জসিমউদ্দিনের মালিকানাধীন চালের আড়ৎ থেকে ৫০ কেজি করে (১০ বস্তা) ৫০০ কেজি জেলে চাল জব্দ করা হয়। স্থানীয়রা নির্বাহী অফিসারকে খবর দিলে নির্বাহী অফিসারে নির্দেশে শশীভূষণ থানা পুলিশ ওই আড়ৎ থেকে চাল গুলো জব্দ করেন এবং জব্দকৃত ৫শ’ কেজি চাল খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা কমল দের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে বলে শশীভূষণ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
সূত্রে জানা যায়, এওয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সামদ্রকি মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞার বিপরিতে বিতরণকৃত দ্বিতীয় কিস্তির ৫৬১ জন সুবিধাভোগী জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেক জেলেকে ৩০ কেজি চালের পরিবর্তে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। জেলেদের প্রাপ্ত চাল কম দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম খোকন ও ইউপি সদস্যরা মিলে অবশিষ্ট চালের বস্তা পরিবর্তন করে চালগুলো কালোবাজারে বিক্রি করে দেন।
এছাড়াও অনেক জেলেদের চালের স্লিপ না দিয়ে ওই চাল গুলো ও তারা লুটেপুটে নেন। বুধবার তার মনোনিত ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা রাকিব হাসান মঞ্জুর মাধ্যমে বাজারের জসিম উদ্দিনের আড়তে বিক্রির সময় চাল গুলো স্থানীয়রা আটক করেন।
তালিকাভূক্ত জেলে ইসমাইল কাজী ও আলমগীর মাঝি অভিযোগ করেন, জেলে তালিকায় তাদের না ভূক্ত হলেও ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যন তাদের মধ্যে চাল বিতরণ না করে তালিকাভূক্ত ছাড়া নিজেদের পছেন্দের মানুষকে জেলে চালের সুবিধা দিয়ে থাকেন। তারা প্রকৃত জেলে হয়েও তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তারা।
নাম প্রাকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি সদস্য জানান, ইউপি চেয়ারম্যান গুটি কয়েক ইউপি সদস্যদের সাথে মিলে জেলেদের প্রাপ্য চাল কম দিয়ে ওই চাল ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মঞ্জুর মাধ্যমে বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে ওই বিক্রির সমুদয় টাকা ভাগভাটোয়ারা করে নেন তার।
আড়ৎ মালিক জসিম উদ্দিন জানান, বুধবার তিনি এওয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন জনৈক যুবলীগ নেতা মঞ্জুর নিকট থেকে ৩৮টাকা কেজি দরে ৫০০ কেজি (১০ বস্তা) জেলে চাল খরিদ করেছেন। তিনি নগদ টাকায় চালগুলো খরিদ করেছেন। কোথায় থেকে চালগুলো আনা হয়েছে তা তার জানা নাই।
চাল বিক্রির কথা স্বীকার করে মঞ্জু জানান, তিনি দলীয় স্থানীয় নেতাকর্মী এবং জেলেদের পাওয়া জেলে চালগুলো তাদের কাছ থেকে খরিদ করে আড়ৎদার জসিমের কাছে বিক্রি করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম খোকন বলেন, ৩০কেজি করেই চাল দেয়া হয়েছে। আমি কোন অনিয়ম করিনি। ওই চাল মঞ্জু কোথায় পেয়েছে তা আমার জানা নাই।
চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান জানান, স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে পেয়ে চালগুলো জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply