মাছ দিয়ে চানাচুর তৈরি করলেন বাংলাদেশি গবেষকেরা মাছ দিয়ে চানাচুর তৈরি করলেন বাংলাদেশি গবেষকেরা – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : hafija khan : hafija khan
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সাংবাদিক সমন্বয় পরিষদ বরিশাল’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত। সভাপতি আলহাজ্ব কে.এম তারেকুল আলম অপু সাধারন সম্পাদক মোঃ অলিউল ইসলাম – ঝালকাঠির শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরষ্কার পেল বন্ধুমহল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি নলছিটিতে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা হেফাজতের নলছিটি উপজেলার কমিটি গঠন : সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সম্পাদক হানযালা নোমানী নলছিটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালিত বিজয় দিবসে নলছিটিতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প নলছিটিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত নলছিটি উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটি গঠন , মোহসীন আহবায়ক, মিঠু সদস্য সচিব  নলছিটিতে বিএনপি নেতা গিয়াস মাঝির স্মরণ সভা  সাংবাদিক মিলন কান্তি দাসের পিতার ৪০তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

মাছ দিয়ে চানাচুর তৈরি করলেন বাংলাদেশি গবেষকেরা

Reporter Name
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৬৯ সময় দর্শন

চানাচুর বললে মনটা চনমনে না হলে কাউকে বেরসিক বলা কি ভুল হবে? হয়তো ‘না’। তার ওপর দিনটা যদি হয় একটু মেঘলা, সঙ্গে যদি থাকে মুড়ি। তার সঙ্গে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ আর শর্ষের তেল হলে তো সোনায় সোহাগা! কিন্তু যদি বলি, চানাচুরটা মাছের, তাহলে নাক সিটকাবেন? চানাচুরের মধ্যে মাছ? এ তো একেবারে ‘কিসের সঙ্গে কী পান্তাভাতে ঘি’–এর চেয়ে কয়েক কাঠি সরেস! তবে এটা গালগপ্প নয়, মাছ দিয়ে চানাচুর বানিয়ে দেখিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি

বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। শুধু চানাচুর নয়, তাঁরা মাছের বাদাম ও তিলের খাজাও বানিয়েছেন।এই চানাচুর, বাদাম ও তিলের বার বা খাজা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে কাচকি মাছ। কাচকি মাছের নাম শোনেননি, এমন কেউ এই বঙ্গদেশে নেই। দেশি প্রজাতির এই ছোট মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Corica Soborna। দেশের নদীনালা, খালবিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আর এই মাছ যে আর দশটা মাছের মতোই পুষ্টিকর, তা–ও আমরা জানি। সমস্যা হলো,

পরিবারের নবীন সদস্যদের নিয়ে। মাছে–ভাতে বাঙালি না বলে এই নবীনদের মাছে–মুরগিতে বাঙালি বলার সময় এসেছে হয়তো। কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ পরিবারের নবীন সদস্যদের পাতে দেওয়াই দায়। এর চেয়ে বরং মুরগিই তাদের কাছে অতি আদরণীয়। তাই মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শিশুদের প্রাণিজ আমিষ জোগাতে এসব খাদ্যপণ্য তৈরি করেছেন গবেষকেরা।

চানাচুর, বিভিন্ন বার বা খাজা খেতে অবশ্য শিশুদের ‘না’ নেই। পুষ্টিবিদেরা বলেন, এ ধরনের খাবার সাধারণত শর্করা ও চর্বিসমৃদ্ধ হয়, আমিষ তুলনামূলক অনেক কম থাকে। মাত্রাতিরিক্ত শর্করা ও চর্বি খাওয়া যেকোনো বয়সী মানুষের জন্য ক্ষতিকর। আর প্রাণিজ আমিষের অন্যান্য উপাদানের মধ্যে যেকোনো মাছ অধিক পুষ্টিকর এবং এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কম।

শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে কাঁচকি মাছের এসব প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য তৈরি করার পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক মো. নূরুল হায়দার ও মো. মোবারক হোসেন। সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় এক বছর গবেষণা করে সফল হয়েছেন তাঁরা।

প্রধান গবেষক মো. নূরুল হায়দার বলেন, ‘শিশুদের মাছের প্রতি ঝোঁক অনেকটা কম। মুরগি বা অন্যান্য মাংসের প্রতি তাদের প্রবণতা তুলনামূলক বেশি। প্রাণিজ আমিষ হিসেবে মাছ ঝুঁকিমুক্ত ও অতুলনীয়। চানাচুর বা বারের প্রতি শিশুরা এমনিতেই আকৃষ্ট। তাই এসব পণ্যের সঙ্গে মাছ যুক্ত করায় পুষ্টিগুণ নিঃসন্দেহে বেড়েছে। আর এই ভাবনা থেকে এ ধরনের পণ্য তৈরির কথা মাথায় আসে। এতে একদিকে কিছুটা ভিন্ন স্বাদ পাওয়া যাবে, অন্যদিকে পূরণ হবে আমিষের ঘাটতি।’

অধ্যাপক মো. নূরুল হায়দার বলেন, ‘কাচকি মাছে প্রচুর আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং খনিজ পদার্থ (মিনারেল) আছে। এ মাছের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এটি প্রক্রিয়াজাতকরণের ফলে কাঁটাসহ চিবিয়ে খাওয়া যায়। সব বয়সী মানুষের জন্য এসব পণ্য হতে পারে পুষ্টিকর মুখরোচক খাবার।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশ নিউট্রিশন গবেষণাগারে এসব মাছের তৈরি পণ্যের পুষ্টিগুণ পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে সাধারণ চানাচুর বা বারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি আমিষ পাওয়া গেছে এসব পণ্যে। গুণগত মান বিবেচনায় চানাচুরে শতকরা ৩৯-৪২ ভাগ শর্করা, ২৬-৩০ ভাগ লিপিড, ১৮-২২ ভাগ আমিষ ও ৫ ভাগ খনিজ পাওয়া যায়। আর বাদাম ও তিলের বারে শতকরা ৩২-৩৪ ভাগ শর্করা, ১৩-১৯ ভাগ লিপিড, ১৩-১৫ ভাগ আমিষ ও ১২-১৫ ভাগ মিনারেল উপস্থিত ছিল।

গবেষকেরা জানান, মাছ বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করে এসব পণ্য তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করার পর এসব পণ্যে আর মাছের গন্ধ থাকে না। ভিন্ন স্বাদের এসব খাদ্যপণ্যের নির্দিষ্ট আর্দ্রতা বজায় রাখা হয়। ভালোভাবে প্যাকেটজাত করলে এগুলো দু-তিন মাস পর্যন্ত খাবার উপযোগী থাকবে। অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ হওয়ায় সাধারণ চানাচুর ও বারের তুলনায় মাছের তৈরি পণ্যের দাম কিছুটা বেশি হবে। তবে তা ৫-১০ টাকার বেশি নয়।

এই খাবারগুলো কি বাণিজ্যিকীকরণ করা হবে? প্রশ্নের উত্তরে নূরুল হায়দার বলেন, ‘আপাতত বাণিজ্যিকীকরণের চিন্তাভাবনা করা হয়নি। কোনো খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান যদি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে চায়, সে ক্ষেত্রে আমাদের গবেষক দল সহযোগিতা করবে।’

কাচকি মাছের চানাচুর, বাদাম ও তিলের খাজা তৈরির তথ্যটি আমরা জানিয়েছিলাম বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিভাগের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ও বিভাগীয় প্রধান আখতারুন নাহার আলোকে। তিনি বলেন, ‘পুষ্টিগুণ নিয়ে আমার প্রশ্ন নেই। কিন্তু খেতে কেমন লাগবে? চানাচুরের সঙ্গে হয়তো মাছটা ভালোই যাবে। কারণ, মাছ নিশ্চয়ই কুড়মুড়ে হবে। তবে বাদাম ও তিলের বার তো মিষ্টি; এই মিষ্টির সঙ্গে মাছ কতটা মানানসই, তা না খেলে বলা যাবে না। সব মিলিয়ে উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এটা বলতে পারি, এই খাবারগুলো আমিষের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে। আর প্রক্রিয়াজাত হলেও আমিষ সহজে নষ্ট হয় না। কাজেই খাওয়ার আগে অন্তত দুশ্চিন্তার কিছু নেই। চেখে তো দেখাই যায়।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর