ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস- চিরকালীন সেই ক্রিকেটীয় প্রবচনকে সত্য বানিয়ে দেখালো বাংলাদেশ। জোড়া ক্যাচ মিস করে ম্যাচটাও হাতছাড়া করলো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।আজ (রোববার) শারজায় শ্রীলঙ্কার সামনে ১৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছিল টাইগাররা। ৭৯ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে একটা সময় জয়ের সুবাসও পাচ্ছিল।কিন্তু জোড়া ক্যাচ মিসের পরই ম্যাচ ঘুরে যায় লঙ্কানদের দিকে। এরপর বোলারদের উদারতায় আর চাপ ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। লিটন দাস যে দুজনের ক্যাচ মিস করেছেন, সেই চারিথ আসালাঙ্কা আর ভানুকা রাজাপাকসেই ম্যাচ হাতে তুলে দিয়েছেন লঙ্কানদের।
৫ উইকেট আর ৭ বল হাতে রেখে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। আশা জাগিয়েও স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের। সুপার টুয়েলভপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ধাক্কা খেলো টাইগার বাহিনী।শ্রীলঙ্কার রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম ওভারে নাসুম আহমেদকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
প্রথমপর্বে একটি ম্যাচও সুযোগ না পাওয়া এই স্পিনার লঙ্কান ইনিংসের চতুর্থ বলেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন। দারুণ এক ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প ভাঙেন কুশল পেরেরার। ক্রস খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড লঙ্কান ওপেনার (১)।কিন্তু শুরুর সেই ধাক্কা দারুণভাবে সামলে নেন পাথুম নিশাঙ্কা আর চারিথ আসালাঙ্কা। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। বরং দুজনই চালিয়ে খেলতে থাকেন।
দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ৪৫ বলে ৬৯ রানের ঝড়ো জুটিতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত নবম ওভারে এসে জোড়া আঘাতে টাইগারদের ম্যাচে ফেরান সাকিব আল হাসান।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার চার বলের ব্যবধানে তুলে নেন ২ উইকেট, দুটিই বোল্ড। ওভারের প্রথম বলে সাকিব বোল্ড করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে (২১ বলে ২৪), চতুর্থ বলে ঘূর্ণিজাদুতে শিকার আভিষ্কা ফার্নান্ডো (০)।
লঙ্কানদের সেই বিপদের মধ্যেই আঘাত মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ডানহাতি এই পেসারকে তুলে মারতে গিয়ে আকাশে বল ভাসিয়ে দেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (৬)। সহজ ক্যাচ নেন নাইম।
দশম ওভারে ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু এরপরই ভুলের মাশুল দিতে হয় টাইগারদের। ইনিংসের ১২.৩ ওভারে আফিফ হোসেনের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে রাজাপাকসের ক্যাচ ফেলেন লিটন। তখন রাজাপাকসে ছিলেন ১৪ রানে।
এরপর মোস্তাফিজুর রহমানের করা ১৪.৩ ওভারে ডিপ কভারে আসালাঙ্কার (৬৩ রানে ছিলেন তখন) ক্যাচও হাত ফস্কে যায় লিটনের। ওই দুই ক্যাচ মিসের পরই ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কান জুটি।
আসালাঙ্কা আর রাজাপাকসে ৫২ বলে ৮৬ রানের জুটি গড়ে তোলেন। শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারে নাসুম রাজাপাকসেকে (৩১ বলে ৫৩) বোল্ড করলেও জয় আটকাতে পারেননি। ৪৯ বলে ৮০ রানে অপরাজিত থাকেন আরেক জীবন পাওয়া ব্যাটসম্যান আসালাঙ্কা।
এর আগে নাইম শেখের ৫২ বলে ৬২ আর মুশফিকুর রহিমের ৩৭ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের ইনিংসে ভর করে ৪ উইকেটে ১৭১ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছিল বাংলাদেশ।
লিটন দাস ১৬ বলে ১৬, সাকিব আল হাসান ৭ বলে ১০, আফিফ হোসেন ৬ বলে ৭ আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শেষদিকে নেমে ৫ বলে ২ বাউন্ডারিতে করেন অপরাজিত ১০ রান।
Leave a Reply