পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র ২ যুগ পূর্তি উপলক্ষে বরিশালে বর্ণিল আয়োজন
মোঃ শহিদুল ইসলাম:: আগামীকাল ২ রা ডিসেম্বর ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২ যুগ পূর্তি উপলক্ষে বরিশাল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এ্যানেস্ক ভবন,সিটি করপোরেশন ও আশেপাশের ভবন গুলো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। নাজিরের পুল, সোহেল চত্বর, বিবির পুকুর,কালেক্টর পুকুর পাড়সহ নানা স্থাপনায় ব্যাপক বর্নিল সাজে সেজেছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড় তোরণ ও পদ্ম সেতুর আদলে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু । এযেন নানা রঙের আলোকমালায় সেজেছে নগরী। তবে করোনার কারনে গত বছর ঐ ভাবে পালন করা হয়নি শান্তি চুক্তির বর্ষপূর্তি। তাই এ বছর জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালনের সিন্ধান্ত নিয়েছেন বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা।প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীকে ঘিরে ইতিমধ্যে সরব রয়েছে জেলা,উপজেলা,ইউনিয়নের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।গতকাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, বড় বড় তোরন, বিলবোর্ডসহ ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে ব্যস্ততম এলাকাজুড়ে । গতকাল ঐতিহাসিক পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২ যুগ পূর্তিতে দিনের শুরুতেই রয়েছে শহীদ সোহেল চত্বর দলীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ,এছাড়া বিকালে রয়েছে স্বরন কালের সেরা সমাবেশ ও আনন্দ রেলির আয়োজন করবেন নীতিনির্ধারকরা আর এতে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে লোকসমাগম জড়ো করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন বলে একটি সুত্র জানায়।আর এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন কৃষিবিদ আ,ফ,ম বাহাউদ্দীন নাছিম যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,উদ্বোধক হিসাবে থাকবেন সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,বিশেষ অতিথি হিসাবে থাকবেন এ্যাড,আফজাল হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,এছাড়াও বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপত্বিতে কেন্দ্রীয় ও জেলা মহানগর আওয়ামী লীগর সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।উল্লেখ্য’ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিলো ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। পার্বত্য জেলাগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক উদ্যোগে একটি অসম্ভব কাজ সম্ভব হয়েছিলো সেদিন। যা যুগ যুগ ধরে পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বর্ণিল জীবনাচার, ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি এ অঞ্চলে নতুন এক শান্তির বারতা নিয়ে আসে।সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছিলো। সেদিন সরকারের পক্ষে তৎকালীন চিফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে শান্তিবাহিনীর দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের সংগ্রামের। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র আন্দোলনকারী সদস্যরা। শান্তিচুক্তির ফলে প্রাথমিকভাবে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। সরকার তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে।শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে। চুক্তির ফলে স্বাভাবিকতা ফিরে আসায় দূর পাহাড়ের বুক চিরে রাত-দিন ছুটছে যানবাহন। এক সময় জেলার বাইরের অন্য জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। পাহাড়ের পর্যটন স্পট সাজেক ছিল আতঙ্কিত ও বিচ্ছিন্ন। যোগাযোগ ছিল নিষিদ্ধ। চুক্তির ফলে সেই সাজেক পর্যটন স্পট আজ সর্বত্র সুনাম ছড়িয়েছে। গড়ে উঠেছে বড় বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ। প্রতিনিয়ত আসছে শত শত পর্যটক।এছাড়া সারাদেশে সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পার্বত্য এলাকায় বিগত সময়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পাহাড়ে শান্তির পাশাপাশি সেখানে বসবাসকারীদের আর্থ-সামাজিক জীবনেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন
Leave a Reply