বরিশাল জেলা পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে পরীক্ষায় মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়েও নিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়া সেই আসপিয়া ইসলাম কাজল (১৯) ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার চিঠি পেয়েছেন।রোববার (২৬ ডিসেম্বর) বরিশাল জেলা পুলিশে টিআরসি পদে নিয়োগ কমিটির সভাপতি পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, পুলিশ কনস্টেবল পদে আসপিয়ার নিয়োগ বাতিল করা হয়নি। নিয়োগ আবেদনে তার স্থায়ী ঠিকানা ভুল উল্লেখ ছিল। তবে তার চাকরি হবে না, এটা কখনো বলা হয়নি। যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল নিয়মের মধ্যে থেকে তা সমাধান করা গেছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে আসপিয়াকে কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে এবং ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আসপিয়া নিয়োগ আবেদনে স্থায়ী ঠিকানা ভুল উল্লেখ থাকায় তার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এতে তার পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি শুরু হয়। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে আসপিয়াকে সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণ ও চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই নির্দেশনার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসপিয়ার জন্য হিজলায় সরকারি খাস জমিতে ঘর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।অন্যদিকে আসপিয়ার স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা নিরসনে পুলিশের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। অবশেষে সেই জটিলতা নিরসন হলে আসপিয়াকে কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য নির্বাচিত করা হয়।
রোববার বিকেলে আসপিয়া ইসলাম কাজলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার পর পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো ধরনের চিঠি বা নোটিশ পাচ্ছিলাম না। বিষয়টি নিয়ে আমি ও আমার পরিবার দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারছিলাম প্রক্রিয়া চলমান। অবশেষে সেই দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে। শনিবার রাত ৮টার দিকে হিজলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. মিজান একটি চিঠি দিয়ে যান। খাম খুলে দেখতে পাই কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। ছয় মাসের মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে ২৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। চিঠির নিচে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর আছে।
আসপিয়া আরও বলেন, একটি মাধ্যমে কথা বলে জানতে পেরেছি বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে পাঠানো হবে। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা শেষে নারী টিআরসিদের ছয় মাসের প্রশিক্ষণের জন্য রংপুরে পাঠানো হবে।তিনি আরও বলেন, চিঠি পড়ার পর আমার পরিবারে আনন্দের জোয়ার বইছে। এ আনন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য। তার প্রতি আমি আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এদিকে প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশে আসপিয়ার জন্য ঘর নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বকুল চন্দ্র কবিরাজ বলেন, আসপিয়ার জন্য উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের খুন্ন গোবিন্দপুর এলাকায় ২ শতাংশ খাস জমিতে ২ কক্ষবিশিষ্ট একটি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ কাজ চলছে। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহ দু-একের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে আসপিয়াকে হস্তান্তর করা যাবে।
Leave a Reply