নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল ও পটুয়াখালী:: পটুয়াখালীতে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৬৭ জন। এ ছাড়া গত ১ মাসে জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৬৪ জন। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়রিয়া রোগীর বেডের চেয়ে রোগীর সংখ্যা তিন থেকে চার গুণ বাড়তি। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
আজ বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৫টি বেড রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ১৬ জন। এ ছাড়া বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ২৭ জন। এতে করে হাসপাতালের মেঝে, সিঁড়ির কোনায় ও বারান্দায় অবস্থান নিয়েছে রোগীরা।
বরগুনার তালতলীর ফাতিমা বেগম বলেন, ‘আমার সন্তান গত পাঁচ দিন ধরে ডায়রিয়ায় ভুগছে। হঠাৎ করেই এ সমস্যা দেখা দিছে। তিন দিন আগেই হাসপাতাল থেকে আনছি। এখনো সুস্থ হয় নাই, আগের মতোই আছে। অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি আমরা।’
শহরের হেতালিয়া বাঁধঘাট এলাকার আশ্রাফ মিয়া বলেন, ‘তিন দিন ধরে ডায়রিয়া। গতকাল রাত ১২টায় হাসপাতালে ভর্তি হইছি। কী কারণে ডায়রিয়া হইছে তা বলতে পারি না। মনে হয় গরমেই এ সমস্যা হইছে।’
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত এক মাসে উপজেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সদর উপজেলায় ১২৪, মির্জাগঞ্জে ১১৮, দুমকিতে ২২, বাউফলে ১৪৮, দশমিনায় ১০৩, গলাচিপায় ১৪৯ এবং কলাপাড়ায় ৩১২। এ ছাড়া পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত এক মাসে ভর্তি হয়েছে ৩৮৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ২৩৫ জন। এ বছর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন মজুত রয়েছে। জেলায় ১০০০ সিসি স্যালাইন ১৪ হাজার ১৭৮টি এবং ৫০০ সিসি স্যালাইন ৫ হাজার ৫৮৭টি ব্যাগে মজুত রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পটুয়াখালী সাগর ও নদীবেষ্টিত জেলা। এই জেলায় প্রতিবছর ডায়রিয়ারর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এ বছরও ডায়রিয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক মাসে গড়ে ৪০ জন রোগী ছিল, কিন্তু গত সপ্তাহ থেকে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০-এ চলে আসছে। তবে ডায়রিয়া মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। এ ছাড়া গরমে ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে বাইরের খোলা খাবার পরিহার করা, পর্যাপ্ত পানি পান করা ও নলকূপের পানি ব্যবহারের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে জেলার সব জায়গায় খবর পৌঁছায় দিচ্ছি।’
Leave a Reply