নিজস্ব প্রতিবেদক:::ঝালকাঠির নলছিটিতে চৌকিদার ও ব্যবসায়ীর বসতঘর থেকে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফের ১৪ বস্তা (৫০ কেজির ওজনের) ৭০০ কেজি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার আয়নাল হকের বসতঘর থেকে ৯ বস্তা ও ইউসুফ খান নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বসতঘর থেকে আরও ৫ বস্তা চাল উদ্ধার করে পুলিশ। শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন প্রতাপ গ্রাম থেকে এ চাল উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ইদুল ফিতর উপলক্ষে ভৈরবপাশা ইউনিয়নে ২ হাজার ৩৬৬ জন দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তির জন্য ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও প্রত্যেককে এক থেকে দেড় কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়। ওই চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম, ওজনে কারচুপি, ভুয়া নাম দেখিয়ে চাল উত্তোলন ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।এমনকি চাল বিতরণের সময় সরকারি তদারকি কোনো কর্মকর্তাকে দেখা যায়নি।
শনিবার সকালে প্রায় ১ মে.টন ভিজিএফের চাল স্থানীয় তিনজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন চেয়ারম্যান ও সচিব। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। রাতে ওই চাল পাচারের সময় স্থানীয় জনতা তা আটক করে পুলিশে খবর দেয়।বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ভৈরবপাশা ইউনিয়নে ভিজিএফের চাল আত্মসাতের ঘটনা নতুন নয়। এবার ইদে দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের নামে বরাদ্দ চাল নিয়ে যা হয়েছে, তাকে পুকুরচুরি বললেও অত্যুক্তি হবে না। সরকার ঘোষিত প্রতি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও চাল দেওয়া হয়েছে ৯ কেজির কম। গরিবের হক মেরে খাওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি তদারকি কর্মকর্তা সবাই তৎপর। ধরা পড়লে একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, চালের বস্তাগুলো ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতীয় গোডাউনের রাখা হয়েছিল। সচিবের কাছে ছিল ওই গোডাউনের চাবি। কিভাবে চাল পরিষদের বাহিরে গেলো এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।তবে ইউপি সচিব মিঠুন সিকদার ভিজিএফের চাল বিক্রি ও গোডাউনের চাবি তার কাছে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নলছিটি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি জানান, আয়নাল হক নামে এক চৌকিদারের বাড়িতে ভিজিএফের কিছু চাল রাখা আছে-এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৯ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তীতে ইউসুফ নামে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর বসতঘর থেকে আরও ৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
Leave a Reply