নিজস্ব প্রতিবেদক:::বরিশালের বাকেরগঞ্জে আলোচিত রনি মোল্লা হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) ও ২২ মামলার আসামি মো. জহিরুল ইসলাম মামুন ওরফে হাতকাটা মামুনকে এক সহযোগীসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮। রোববার (০১ মে) বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের রুপাতলীর র্যাব-৮ এর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমান্ডিং অফিসার অতিরিক্ত ডিআইজি জামিল হাসান।
তিনি জানান, গত ২১ এপ্রিল রাতে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানাধীন সোনাপুরা গ্রামের রবিউল ইসলাম রনি মোল্লাকে কুপিয়ে হত্যা এবং তার দুই ভাইকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করা হয়।
সে ঘটনায় আহত ও নিহতের বাবা মো. ইয়াছিন আলী মোল্লা বাদী হয়ে ২১ এপ্রিল বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ১৯ এপ্রিল ঘটনার সময় মামলার প্রধান আসামি মো. জহিরুল ইসলাম মামুনসহ অন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র (ধারালো দা, রামদা, ছেনা, বগি দা) দিয়ে বরিউল ইসলাম রনি মোল্লাকে খুনের উদ্দেশ্য এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করে।
ওইসময় রনি গুরুত্বর জখম হন। পাশাপাশি এ সময় তার ভাই সাইদুল ইসলাম সোহেল ও তরিকুল ইসলাম তৌফিককেও গুরুত্বর জখম করা হয়। হতাহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে রনি ও তার ভাই সোহেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ এপ্রিল ভোর ৪টার দিকে রনি মৃত্যুবরণ করেন।
এরপর এ ঘটনায় রনির বাবা ইয়াছিন আলী বাদী হয়ে ২১ এপ্রিল বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং র্যাব-৮, বরিশালের একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৮, বরিশালের একটি চৌকস আভিযানিক দল গতকাল ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় (ইফতারির সময়) ঘটনার সাথে জড়িত ও দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি মামুনকে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয়।পাশাপাশি তার চাচাতো ভাই ও অন্যতম সহযোগী আফদু হাওলাদার ওরফে আব্দুর রবকেও (৩৫) গ্রেফতার করা হয়। মামুন মেম্বার ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুর রবকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল।
র্যাব-৮ এর উপপরিচালক মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামুন মেম্বার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইসাপুরা গ্রামের আব্দুল মালেক হাওলাদারের ছেলে ও স্খানীয় ফরিদপুর ইউনয়িন পরিষদের মেম্বার। আর তার সহযোগী আফদু হাওলাদার ওরফে আব্দুর রব একই এলাকার মৃত মকিব আলী হাওলাদারের ছেলে।
গ্রেফতার মামুন মেম্বারের বিরুদ্ধে খুন, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজি, মাদকসহ নানান অভিযোগে বাকেরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা রয়েছে। ২০১৬ সালের ১১ জুন ফরিদপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাওলাদারকে কুপিয়ে হত্যা মামলারও এক নম্বর আসামি ছিল মামুন। এছাড়া পটুয়াখালীর বাউফল থানায় মাদক মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্টও জারি হয়েছে।
অপরদিকে গ্রেফতার মামুনের চাচাতো ভাই আব্দুর রবের নামেও দুটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার আসামিদের বাকেরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply