পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া আজিজ আহম্মেদ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ও সহকর্মীর পরকিয়াসহ অনৈতিক কর্মকান্ডের ছেদ পরায় বাদানুবাদের ৯মিনিট ১৬সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সর্বত্র সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।
রবিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে কল রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। কলেজ অধ্যক্ষ অবশ্য কলরেকর্ডটি তার নয় বলে দাবি করেছেন।কল রেকর্ডটিতে শোনা যায়, কলেজ অধ্যক্ষ আহসানুল হক তার অনৈতিক কর্মকান্ডের সহকর্মী একই কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষিকা শিলা রাণীর হালদারকে ক্ষিপ্তকন্ঠে বলছেন, আমার বাসায় গিয়ে আমার সাথে যা করছো সেগুলোকি ভিডিও করে সবাইরে দেখাইছো? আর এখন বাহিরে সব বলে বেড়াচ্ছ। তোরে আমি অনেক সুযোগ দিছি- এছাড়াও তোকে আমি অনেক কিছু দিয়েছি তুই এখন আর আমার ফোন ধরোনা। এখন তোর অনেক মানুষ হইছে। তুই আর কখনো আমার সামনে আসবি না আসলে তোর খবর আছে। আর আমি চাইলে তুই এতদিন কলেজে থাকতে পারতি না, তবে তুই কেমনে কলেজে থাকো তাও আমি দেখে নিব।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ আহসানুল হকের বিরুদ্ধে কলেজটিতে সীমাহীন অনিয়ম-দূর্ণীতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ জাল-জালিয়াতি ও নারী কেলেংকারীর অসংখ্যে অভিযোগ রয়েছে। একাধিক সহকর্মী শিক্ষিকাকে কুপ্রস্তাব দেয়া, একান্তে ডেকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়ানোর স্ক্যান্ডাল এখন সবার মুখে মুখে প্রচারিত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এসকল সুনির্দিষ্ট অভিযোগের একাধিক প্রমান ও হাতে নাতে ধরা পড়লেও কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের নিকটাত্মীয়তার কারণে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে তিনি (অধ্যক্ষ) ধামাচাপা দিয়ে বহাল তবিয়তে আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কলেজ প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মো: জসিম উদ্দিন হাওলাদার অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ আহসানুল হক একজন দুশ্চরিত্রের লোক। তার নানা কুকীর্তিতে কলেজটির সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। সহকর্মী নারী শিক্ষিকাদের উত্যক্ত করা তার স্বভাবে পরিনত হয়েছে। ওনার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।
শিলা রাণী হালদারের স্বামী প্রণব ব্যাপারী কল রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আহসানুল হকের দ্বারা আমি অনেক ক্ষতিগ্রস্থ। তার কুপরামর্শে আমার সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছে। অধ্যক্ষের অনৈতিক চাপ ও নানা প্রলোভনে শিলার দ্বারা আমার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দিয়ে দুরত্বের সৃষ্টি করেছে। আমি এখনও চাই অধ্যক্ষের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক বাদ দিয়ে সে (শিলা) আমার সংসারে আসুক, আমি বিনা বাক্যে তাকে ঘরে তুলতে চাই।
অধ্যক্ষ আহসানুল হক কলরেকর্ডসহ আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি প্রযুক্তির সৃষ্টি, তার বিরোধী একটি চক্র সামাজিক ভাবে তাকে (অধ্যক্ষ) হেয় করতে বানানো অডিও রেকর্ডটি ছড়াচ্ছে। ভাইরাল হওয়া কলরেকর্ডের পরুষকন্ঠটি তার কিনা প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটি তার কন্ঠ নয়, কলেজের কিছু দুস্টচক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে এটি তৈরী করে ইন্টারনেটে ছড়িয়েছে।
দুমকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল ইমরান বলেন, কল রেকর্ডের বিষয়টি আমি শুনেছি, ওই কলেজের বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে আমরা তদন্ত রিপোর্টে বিষয়টি উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক স্যারের কাছে পাঠাব।
Leave a Reply