প্রেমের টানে ভারতের তামিলনাড়ু থেকে বাংলাদেশে আসা যুবক প্রেমকান্ত এবার আইনি পরামর্শের জন্য গেলেন হাইকোর্টে। আজ বৃহস্পতিবার তিনি হাইকোর্টে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান ও অ্যাডভোকেট নিশাত ফারজানা নিপার চেম্বারে আইনি পরামর্শ করেন।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এবং অ্যাডভোকেট নিশাত ফারজানা নিপা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেমকান্ত আমাদের কাছে আইনি পরামর্শের জন্য এসেছিলেন। আমরা মনে করি, তিনি বিদেশি নাগরিক হলেও বাংলাদেশে তাঁর আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার রয়েছে।’
ভারতের তামিলনাড়ুর যুবক প্রেমকান্ত। পেশায় নৃত্যশিল্পী। বাংলাদেশে থাকেন প্রেমিকা। তার টানে গত জুলাইয়ের শেষ দিকে তামিলনাড়ু থেকে বরিশালে আসেন।প্রেমাকান্তের দাবি— বরিশাল শহরে এসে পিটুনির শিকার হন তিনি।
প্রেমকান্ত একজন নৃত্যশিল্পী। বরিশালে প্রেমিকার সঙ্গে দেখাও হয়েছিল তাঁর। তবে, সেখানে এক যুবক দাবি করেন- তিনিই মেয়েটির ‘আসল প্রেমিক’। এরপর পিটুনি খেয়ে তিন রাত থানায় হাজতবাস করেন প্রেমাকান্ত।
তবে পুলিশের দাবি— প্রেমকান্তের অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। বরং, দেখা করতে আসা কিশোরীর সঙ্গে গাড়িতে বসে খারাপ আচরণ করায় দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয়রা সেটি সমাধানের চেষ্টা চালায়। উত্তেজিত প্রেমকান্তকে অটো থেকে নামানোর চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল দাবি করে পুলিশ জানায়, এরপর তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। স্থানীয়রা ভারতীয় নাগরিক দেখে তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করলে আত্মরক্ষার্থে মিথ্যার আশ্রয় নেন প্রেমকান্ত। অভিযোগ তোলেন মারধর ও টাকা, মোবাইল নিয়ে যাওয়ার।
গত ৮ আগস্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ হালদার বলেন, ‘প্রেমকান্তের অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমরা দেখেছি। কিন্তু তদন্তে তার করা অভিযোগগুলো অসত্য বলে উঠে এসেছে। মূলত কাশিপুরের সড়কে যে ভিডিও ফুটেজের কথা বলছেন, সেখানে ওই যুবকের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে। তাকে কেউ মারধর করেনি। স্থানীয়রা তাকে থানায় হস্তান্তর করার পরে তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হয়েছে।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন সে সময় বলেছিলেন, ‘ভারতীয় ওই যুবকের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দেওয়া ও তাকে চাপ সৃষ্টি করে নিয়ে যাওয়ার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যদি এমন ঘটনা তিনি ঘটান তা অবশ্যই অপরাধ। আমরা অভিযোগটির তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সেদিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে প্রেমকান্ত বলেন, ‘তালতলী থানায় যে অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে- আসলে এমন কোনো আচরণ আমি করিনি। তার সঙ্গে হোটেলে, কলেজে এবং কাশিপুর চৌমাথায় দেখা হলেও খারাপ কোনো প্রস্তাব দেইনি।’
Leave a Reply