জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ডিম নিয়ে যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে সেটা স্পষ্ট। দাম নিয়ে যারা কারসাজি করেছে সে সব অসাধুদের খুঁজে বের করব। এর পেছনে কে বা কারা আছেন তাদের কালোহাত যেন আর কখনো না বাড়তে পারে সেই ব্যবস্থাও নেবো।
বুধবার অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ডিমের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে উৎপাদনকারী ফার্ম, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, এজেন্ট, ডিলার ও ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দু-একজন ব্যবসায়ীর জন্য পুরো খাত ভূগবে সেটা আমরা হতে দেবো না। ডিম নিয়ে এমন অস্বাভাবিক ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া হবে না। এটা আমরা ফাইন্ড আউট করবো। এমন নির্দেশনাও ওপর মহল থেকে আছে। এবার ছাড়বো না। অভিযানের মাধ্যমে আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, সেগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন আকারে জমা দেবো। এরপর যথাযথ কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থা নেবেন।
তিনি জানান, বিগত সময় তেল সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবেদন সাপেক্ষে প্রতিযোগিতা কমিশন বিভিন্ন কোম্পানিকে আটটি মামলা করেছে। যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।
সফিকুজ্জামান বলেন, যখন জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে তখন একটি ডিমে ২০-৩০ পয়সা খরচ বেড়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম এক রাতে তিন টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটা একদম অস্বাভাবিক। সরকার বিভিন্ন দিকে ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিচ্ছে। এখন যদি আমদানি ওপেন করে দেওয়া হয় অনেকে পথে বসবেন। কিন্তু আপনারা সিন্ডিকেট করছেন। সে জন্য জনগণের কাছে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। কোম্পানি ডিমের দাম অবৈধভাবে বাড়িয়ে মূল্য নির্ধারণ করেছে। আড়তদাররাও একই কাজ করেছেন।
কেউ বলেছেন- দাম নির্ধারণের ক্ষমতা নেই সেটা তারা জানতেন না। আইন না জানলে ব্যবসা করার দরকার নেই।
এ সময় কাজী ফার্মের প্রসঙ্গ টেনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, পরিবহন সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কয়েকদিনে তাদের ডিমের দাম তিন টাকা বেড়েছে। এ বাড়তি দামে কাজী ফার্মের যে দরদাতা সেই ফয়সালকে আজ উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। তিনি আসেননি। নাকি তাকে আসতে দেওয়া হয়নি? এরমধ্যেও অদৃশ্য হাত আছে। সেটা চিহ্নিত করতে বসেছি।
সভায় জানানো হয়, ডিমের দামের কারসাজির তথ্য খুঁজে বের করতে সাভারে কাজী ফার্মের আঞ্চলিক ডিপোতে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিদপ্তর। প্রথম দফায় (২০ আগস্ট) ডিমের দাম বাড়ানো নিয়ে কারসাজির অভিযোগে সাভারে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ফয়সাল সরকারের ‘ফয়সাল এন্টারপ্রাইজকে’ আড়াই লাখ টাকা জরিমানাসহ সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ কাজী ফার্মের বিক্রয়কেন্দ্রের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে আসছে। সিন্ডিকেটের পেছনে কোম্পানি ও তার হাত রয়েছে।
Leave a Reply