দেশত্যাগের প্রাক্কালে গ্রেফতার হয়েছেন পিপলস্ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি এর প্রায় দুইশত কোটি টাকা আত্মসাতকারী পি কে হালদার এর অন্যতম সহযোগী খবির উদ্দিনের দুই কন্যা। তারা গত ২৮ জুলাই দেশে এসেছিল ও আজ গোপনে কানাডা পালাচ্ছিল।
প্রায় দেড় যুগ ধরে কানাডায় অবস্থান করা শারমিন ৩১ কোটি ও তানিয়া ৩৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাত করে। তারা তাদের পিতা, প্রতিষ্ঠানটির সাবেক পরিচালক খবির উদ্দিনের মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করে।বুধবার (২৪ আগস্ট) তাদের গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছে।বিষয়টি আইন র্যাবের গণমাধ্যম শাখা সূত্র নিশ্চিত করেছে।এর আগে তাদেরকে রাজধানীর ধানমন্ডি ও শ্যামলী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, দেশের আর্থিক খাতে আলোচিত নাম প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। তিনি দেশের আর্থিক খাতের শীর্ষ খেলাপীদের মধ্যে অন্যতম একজন। গত ১৪ মে কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে তাকে পাশের দেশের গোয়েন্দা বাহিনী গ্রেফতার করে। ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস্ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে নানা অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির কারণে ২০১৯ সালে পিপলস্ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স কোম্পানি এর সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসময় বিজ্ঞ আদালত পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেন।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তি/শ্রেণির আমানতকারী রয়েছে এবং বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীর প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা আটকা পড়েছে। এই টাকার পুরোটাই পিপলস্ ঋণ হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাওনা রয়েছে। এই অর্থের একটি বড় অংশ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা বিভিন্ন নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাত করেছে।
পিপলস্ লিজিং এন্ড ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক খবির উদ্দিন পি কে হালদার এর অন্যতম সহযোগী। তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকাকালে নিজে প্রায় ২০০ কোটি টাকা পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে বেনামে ঋণ নিয়ে আত্মসাত করে। পরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির ঋণ খেলাপীদের বিজ্ঞ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন মহামান্য হাইকোর্ট। পরে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৯ এপ্রিল আদালত তাদের গ্রেফতার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা প্রদান করেন। র্যাব জানতে পারে যে, এই প্রতিষ্ঠানের ২ জন ঋণ খেলাপী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে খবির উদ্দিনের দুই কন্যাকে গ্রেফতার করা হয়।
Leave a Reply