নিজস্ব প্রতিবেদক:::প্রেমিকার পরিবারের করা মামলায় মা-বাবাকে মুক্তি দিতে প্রেমিকাকে ফেরত দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না মো. হৃদয় হোসেন (১৯) নামে এক তরুণের। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ভোর রাতের দিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ডেফুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
তবে স্বজনদের অভিযোগ, প্রেমিকার স্বজনরা মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করেছে তাকে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নিহত হৃদয় ওই এলাকার খোকন হাওলাদারের ছেলে এবং পেশায় একজন ইলেকট্রিশিয়ান।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এমন একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। আজ (২৭ আগস্ট) সকালে ময়নাতদন্ত করা হবে। তার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
নিহত হৃদয়ের বাবা খোকন হাওলাদার ও মা মারুফা বেগম জানিয়েছেন, কুদঘাটা এলাকার বাসিন্দা অটোচালক জাকির হোসেনের মেয়ের সঙ্গে হৃদয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ১৬ আগস্ট তারা পালিয়ে একটি কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন। ওদিকে জাকির হোসেন অপহরণের অভিযোগ করেন থানায়।
অভিযোগ পেয়ে হৃদয়ের মা-বাবাকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ শর্ত দেয়, হৃদয় যাকে নিয়ে পালিয়েছে তাকে ফেরত দিলে তার মা-বাবাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। সেই আশ্বাসে ১৯ আগস্ট প্রেমিকাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়ে মা-বাবাকে মুক্ত করে হৃদয়।
হৃদয়ের মামা হাবিবুর রহমান বলেন, তাদের মেয়েকে ফিরিয়ে দেওয়া হলে স্থানীয়ভাবে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করে। কিন্তু মেয়ে হৃদয়ের কাছে ফিরে আসার চেষ্টা করে। অসংখ্যবার সে হৃদয়কে কল দেয়। হৃদয় আমাকে তা দেখিয়েছে। কিন্তু হৃদয় মেয়ের কল রিসিভ করত না। এই ঘটনার পরও সেই মেয়ের ভাই, চাচা, বাবা হৃদয়কে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। না হলে মেরে ফেলবে বলেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে হৃদয় এমন অভিযোগ করে বাড়ি চলে যায়। রাত ১২টার দিকে খবর পাই, ওই মেয়ের বাড়ির আনুমানিক ৩০০ গজ দূরে বালুর মাঠ এলাকায় হৃদয় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, হৃদয়কে ওই মেয়ের ভাই, চাচা, বাবা মিলে পরিকল্পিতভাবে মেরে বালুর মাঠে ফেলে রেখেছে। এই হত্যার বিচার চাই আমরা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত ১টার পরে হৃদয়কে হাসপাতালে নিয়ে আসে। চিকিৎসক জানিয়েছ, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে তার মরদেহ মর্গের ফ্রিজে রাখা হয়েছে।
Leave a Reply