নিজস্ব প্রতিবেদক-:::বরিশালে একই জায়গা নিয়ে দ্বন্দ্বে ভবন ভাঙা নিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পৃথক দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে উত্তাপ ছড়িয়েছে।উভয় পক্ষ ভাঙতে থাকা বিদ্যালয় ভবনটির জায়গা নিজেদের দাবি করছে। এনিয়ে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দুই পক্ষের শিক্ষকরাই অবস্থান নেন।
পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সমাধানের কথাও বলেছেন তারা।
জানা গেছে, গত সপ্তাহ ধরেই বরিশাল নগরের বিএম কলেজ রোডের কলেজিয়েট বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবহৃত একটি ভবন ভাঙা শুরু করে কর্তৃপক্ষ।তবে সেই ভবন ও জায়গা পাশেই থাকা কলেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বলে দাবি করেছেন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক।
কলেজপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারজানা ইসলাম কাগজপত্রের বরাত দিয়ে বলেন, যে ভবনটি ভাঙা হচ্ছে সেটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন, যা কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছিল মাত্র।
কিন্তু ভবন ও ভবনের জায়গা তারা দাবি করে এখন সেটি ভেঙে ফেলছে। এই জমি ও ভবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সে কাগজপত্র রয়েছে।তিনি আরও বলেন, সাবেক ইউএনও মো. মুনিবুর রহমানও জমি পরিমাপ করিয়ে কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবহার করা একতলা ভবনটি আমাদের পুরাতন ভবন উল্লেখ করে রিপোর্ট দিয়েছেন।
এ জমি ও ভবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, তার কাগজপত্র রয়েছে আমাদের কাছে। তারপরও মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ভবনটি এখন ভেঙে ফেলছে।
আর ভবনটি ও এর জায়গা ফেরত চাওয়া তাই আমাদের যুক্তিযুক্ত দাবি, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তারা এসে দেখেছেন এখন তারাই সিদ্ধান্ত দেবেন।
তবে, উল্টো দাবি করে কলেজিয়েট বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রতন বণিক বলেন, বিগত এক বছর আগে এ জমিটি মাপা হয়েছে। সেসময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯.২ শতাংশ জমি তাদের বুঝিয়ে দেওয়াসহ সীমানা পিলার দেওয়া হয়েছে। এতে ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষকসহ কিছু শিক্ষকেরও স্বাক্ষর রয়েছে। আর বর্তমান নিয়ম হচ্ছে ভবন যার জমিও তার।
আর এটা প্রাথমিকের জমি না, এটা পৈত্রিক জমি আমরা কিনেছি। এ জমির জন্য আমরা সব ধরনের প্রকার কর ও খাজনা দিয়ে আসছি। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে এ ভবনটি ভাঙা হচ্ছে। এটি বেসরকারি স্কুলের নিয়মে আছে।
এখানে ৬ তলা ভবন তৈরি করা হবে মাধ্যমিকের জন্য। যদি প্রাথমিকের প্রয়োজন হয় রুম ব্যাবহার করার, তারা তা করতে পারবে। এটি আগেও মিটিং করে বলা হয়েছে। তারা তাতে রাজিও হয়েছিল, কিন্তু এখন উল্টো কথা বলছে।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গিয়ে ইউএনও মনিরুজ্জামান কোনো বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও পরিদর্শন শেষে বরিশাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফয়সাল জামিল বলেন, কলেজপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভেঙে ফেলছে।
আমাকে প্রাইমারির প্রধান শিক্ষক সব কাগজপত্র দেখিয়েছেন, সেগুলো সব সঠিক। সাবেক ইউএনও স্যার একটা রিপোর্ট করে গেছেন যে, ভবনটি প্রাথমিকের।এটি আমি দেখতে এসেছি আর আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারকে বিষয়টি অবহিত করেছি। এখন তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
Leave a Reply