করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে অন্যান্য ডোজের মতো চতুর্থ ডোজ আপাতত গণহারে দেওয়া হচ্ছে না। ঢাকায় প্রথম পর্যায়ে সাতটি কেন্দ্র টিকা দেওয়া হবে। এ দফায় দ্বিতীয় বুস্টার বা চতুর্থ ডোজের টিকা পাবেন পাঁচ শ্রেণির মানুষ। ষাটোর্ধ্ব, সম্মুখসারির যোদ্ধা ও কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন, গর্ভবতী মহিলা এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের এই টিকা প্রদান করা হবে।
চতুর্থ ডোজ হিসেবে ফাইজারের (এমআরএনএ) টিকা ব্যবহার করা হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- করোনা মহামারির বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার দেশের জনগণকে দ্বিতীয় বুস্টার বা চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে চতুর্থ ডোজ হিসেবে ফাইজারের (এমআরএনএ) টিকা দেওয়া হবে। তৃতীয় ডোজ প্রাপ্তির পর চার মাস অতিবাহিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ দেওয়া হবে। ৬০ বছর এবং এর বেশি বয়সী ব্যক্তি টিকা পাবেন। দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং এর বেশি বয়সী জনগোষ্ঠী টিকা পাবেন। স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া হবে। গর্ভবতী মহিলা এবং দুগ্ধদানকারী মাকে টিকা দেওয়া হবে।
সম্মুখসারির যোদ্ধা; স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী; অনুমোদিত বেসরকারি ও প্রাইভেট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী; প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সব সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত কর্মকর্তা-কর্মচারী; বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনা; সম্মুখসারির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী; সামরিক বাহিনী; বেসামরিক বিমান; রাষ্ট্র পরিচালনার নিমিত্ত অপরিহার্য কার্যালয়; সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী; নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি; সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী; সব ধর্মের ধর্মীয় প্রতিনিধি; মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি; জরুরি বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পয়োনিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের সম্মুখসারির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, স্থলবন্দরের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; জেলা ও উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী; ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও চিকিৎসা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছাত্রছাত্রী।
দেশব্যাপী সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা পর্যায়ে অবস্থিত সব স্থায়ী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে (সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল, সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ৫০০, ২৫০ ও ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইত্যাদি) চলমান বুথে চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোতে চতুর্থ ডোজ প্রদানের বুথের বাইরে দৃশ্যমান স্থানে সংযুক্ত ফরম্যাট অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যানার তৈরি ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুর কবির বলেন, চতুর্থ ডোজ টিকাদানের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাজধানীর সাতটি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল, সরকারি কর্মচারী, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে।
Leave a Reply