সরকারি খরচে ছয় জেলার ১৫ লাখ পরিবার বছরে ৫০ হাজার টাকা সমপরিমাণ স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে পাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলায় এটি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে বর্তমানে ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিসের মত কঠিন ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভেজাল খাদ্য, অনিয়ন্ত্রিত লাইফ স্টাইল, বায়ু দুষণসহ নানা কারণে এই অসংক্রামক রোগগুলোতে দেশের শতকরা ৬৭ ভাগ মানুষ মারা যাচ্ছে। এই রোগগুলোর চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি। এজন্য সরকার অসহায়, দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যয়ের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ৫০০টি পরিবার কল্যাণ সেন্টার ঘোষণা দিয়েছি, পর্যায়ক্রমে এগুলো হয়ে যাবে। প্রাথমিক সেবাকে জোরদার করার জন্য ইউনিয়ন হেলথ সেন্টারকেও এর সঙ্গে যুক্ত করে দিতে চাচ্ছি, একীভূত করে দিতে চাচ্ছি। এতে স্বাস্থ্যসেবায় ডুপ্লিকেশন কম হবে, জনবলও কম লাগবে। আমরা স্কুল হেলথ প্রোগ্রামের জন্য একটি নির্দেশিকা বা বুকলেট তৈরি করেছি। সেটি সব স্কুলে দেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি এক জেলা থেকে ছয় জেলায় বিস্তৃত করেছি। এতে ১৫ লাখ পরিবার বছরে ৫০ হাজার টাকা পরিমাণ স্বাস্থ্যসেবা পাবে। মানিকগঞ্জ, বরিশাল, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এ সেবা দেওয়া হবে। ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজের আওতায় এটি করা হচ্ছে। দরিদ্র পরিবারকে টার্গেট করেই এ সেবা দেওয়া হবে। একটি উপজেলায় ১৫ থেকে ২০ হাজার পরিবারকে তালিকায় নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কীভাবে ছোট ছেলে-মেয়েরা সুস্থ থাকবে, কী খাওয়া উচিত- এ ধরনের সব বিষয়ে সেখানে রয়েছে। এক লাখের বেশি মানুষ প্রতি বছর হজ্জে যান, তাদের যে ওষুধ লাগে, সেগুলো অনেক সময় সেখানে পাওয়া যায় না। আমরা সেগুলোর বিষয়ে ভাবছি। হজ্জ পালনের সময় তারা কীভাবে চলবে, সেই নির্দেশনা জানিয়ে একটি স্বাস্থ্য বিধি বই আকারে তৈরি করে তাদের দিচ্ছি।
জাহিদ মালেক বলেন, এ বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে মহিলাদের জন্য জরায়ু ক্যান্সারের ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম শুরু করা হবে। প্রাথমিকভাবে এটি ১০ থেকে ১৫ বছরের শিশুদের শরীরে দেয়া হবে। বর্তমানে মহিলাদের ক্যান্সারে মৃত্যু সব থেকে বেশি জরায়ু ক্যান্সারের কারণেই হয়ে থাকে। এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ফলে, দেশে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যু হার অনেকটা কমে যাবে।
চতুর্থ ডোজ করোনা টিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চতুর্থ ডোজ যেটি দেওয়া হচ্ছে। তার কোনোটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়নি। এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কেউ যেন গুজবে কান না দেয়।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) সৈয়দ মজিবুল হক, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীরসহ অন্যান্য যুগ্মসচিব, পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply