সকাল দেখে সব সময় ঠাহর করা যায় না দিনটা কেমন যাবে। নাজমুল হোসেন শান্তর বেলায়ও যেন তা-ই হয়েছিল। ঘরোয়া লিগে অসাধারণ পারফরম্যান্স করে বাংলাদেশ দলে ডাক পেয়েছিলেন ২০১৭ সালে। তবে জাতীয় দলে তাঁর শুরুটা একেবারেই সুখকর ছিল না।
টানা ব্যর্থ হলেও নির্বাচক কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য তাঁর ওপর যথেষ্ট আস্থা রেখেছে সব সময়ই। প্রচুর সমালোচনার মধ্যেও পরিচর্যাও করে গেছে তাঁকে। ধারাবাহিক ব্যর্থ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেট সমর্থকেরা রীতিমতো হাস্যরস করতেন শান্তকে নিয়ে। যেটা এক সময় লিটন দাসকে নিয়েও হয়েছিল। পরে লিটনও নিজেকে বদলে ফিরেছেন স্বরূপে। বাকি ছিলেন শান্ত। যাঁকে নিয়ে ট্রলের মাত্রা ছিল অনেক বেশি। তা-ই নয়, শান্তকে নেটিজেনরা মজা করে ‘লর্ড শান্ত’ বলেও ডাকতেন!
তবে সেই শান্ত যেন নিজেকে পরিবর্তন করতে বেশ সময় নেননি। তিরস্কার আর কটুকথার জবাব দিতে শিখে গেছেন পারফরম্যান্স দিয়েই। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয় এনে দিতে শান্তর ছিল অন্যতম অবদান। ৪৭ বলে খেলেছেন ৪৬ রানের ধৈর্যশীল এক ইনিংস। তিনে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে জয় নিয়েই তবে মাঠ ছেড়েছেন আজ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন ৩০ বলে ৫১ রানের ঝোড়ো ইনিংস। তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়ে অনেক কথা হলেও, শান্ত যেন মনে করিয়ে দিলেন প্রয়োজনের সময় তিনি ব্যাটিং তাণ্ডবও চালাতে জানেন। আজ আবার টিক উল্টো চিত্র। অন্য ব্যাটারার যখন আসা-যাওয়ার মধ্যে, শান্ত তখন নিজের উইকেট নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেননি। শেষ পর্যন্ত লড়ে গেছেন।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই শান্তর ব্যাটের সঙ্গে ছুটছে রান। ৩৬ গড়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৮০ রান করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) গত সংস্করণে শান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ১৫ ইনিংসে করেছেন ৫১৬ রান। শান্তর পারফরম্যান্স কি তা-ই বলছে না তিনি আর ‘লর্ড’ নন—তিনি একজন লড়াকু।
Leave a Reply