স্টাফ রিপোর্টার|| নগরীর কাউনিয়া থানা সংলগ্নে ‘আলাদিনের চেরাগ’ পাওয়া এক ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে! যিনি চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারী হলেও তার আলিশান বাড়ি দেখে মানুষের ‘মাথা খারাপ’ অবস্থা।
তথ্য সূত্র মতে, ঢাকা ও বরিশাল মিলিয়ে নিজ এবং স্ত্রী-সন্তানের নামে অঢেল সম্পত্তি রয়েছে তার। চাকরিটা তার সরকারি হলেও সপ্তাহের অধিকাংশ সময় তিনি ব্যস্ত থাকেন নিজের অবৈধ ইটভাটা, পুত্রের ডিলারশিপের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ আর সহায়-সম্পত্তির দেখভাল নিয়ে। ছোট চাকরিতে কোটিপতি বনে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল হাই। তিনি বরিশাল বিদ্যুৎ বিভাগে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে চাকুরীতে প্রবেশ করেন। বর্তমানে নিজের পরিচয় দেন সুইজবোর্ড এটেন্ডেন্ট (এসবিএ)। বিত্তশালী ওই কর্মচারীর চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে একাধিক ব্যবসা পরিচালনা এবং দুর্নীতি-লুটপাটের বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য এসেছে প্রতিবেদকের হাতে। ক্রমান্বয়ে সেই পিলে চমকানো খবরগুলো প্রকাশ করা হবে।
কাউনিয়া এলাকাবাসী ও আব্দুল হাইর সাবেক কর্মস্থলে নিয়ে পাওয়া গেছে আতকে ওঠার মত সব কাহিনী। একজন নিরাপত্তা প্রহরী চাকরীর ২৮ বছরে কিভাবে বরিশাল শহরে কাউনিয়া এলাকার মধ্যে অতি ব্যয়বহুল এবং আধুনিকতায় পরিপূর্ণ একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করলেন সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজে পাচ্ছে না কেউ। সরেজমিনে কাউনিয়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে আব্দুল হাইয়ের বাড়ির মত দ্বিতীয়টি আর নেই। তার পাঁচতলা বাড়ির সম্মুখভাগ কালো কাচে চকচক করছে। বাড়ির চারিপাশ সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এত বড় ভবনে নেই হোল্ডিং নম্বর। অর্থাৎ ধনাঢ্যতার সবকিছুতে ভরপুর থাকলেও সিটি করপোরেশনকে কর ফাঁকি দিচ্ছেন তিনি। ওই এলাকায় বিদুৎ বিভাগের নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল হাইকে সকলে ধনী ব্যক্তি হিসেবেই এক নামে চেনে। রাত নামলেই বাড়ির ছাদের পঞ্চম তলার চিলেকোটায় বসতো জুয়ার আড্ডা।বর্তমানে তা বন্ধ। ওই বাড়িটি ছাড়াও ঢাকা এবং বরিশালে আব্দুল হাইয়ের যেসব সম্পত্তি রয়েছে সে বিষয়ে আগামিতে স্ববিস্তর সংবাদ প্রকাশ হবে।
তার কর্মস্থলে খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেছে অনিয়ম-দুর্নীতি-লুটপাটের মহোৎসবের চিত্র। কর্ম দিবসের অধিকাংশ সময় তার ব্যস্ততা থাকে নিজের একাধিক ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে। তবে সরকারি কাজের জন্য বরাদ্দের তেল, আগের দিনে বিদ্যুৎ বিভাগের স্টোরে থাকা তামার তার বিক্রিসহ কর্মক্ষেত্রে এমন কোন লুটপাট নেই যা তিনি করেননি। এদিকে সরকারি চাকুরী বিধি পায়ের তলায় ফেলে নামে-বেনামে ব্যবসা পরিচালনা করছেন আব্দুল হাই। শায়েস্তাবাদ এলাকায় রহমান বিশ্বাসের মাছের ঘের সংলগ্নে রয়েছে তার অবৈধ পাজা ইটভাটা। যদ্দুর জানা গেছে, তার ভাটা স্থল দুর্গম স্থানে হওয়ায় প্রশাসন তেমন একটা অভিযানে না গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই বহু বছর ধরে চলছে তার অবৈধ ভাটা বাণিজ্য। এছাড়া পুত্রের নামে ডিলারশিপ ব্যবসা, ইলেক্ট্রিক পন্য তৈরীর কারখানাসহ জমি ক্রয়-বিক্রয়ের বাণিজ্যের সাথেও যুক্ত আছেন আব্দুল হাই। এর বাইরে তার অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হাই বলেন, তার বাড়ি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করেছেন। তবে ঋণের পরিমাণ এবং বাড়ির মূল্য যোগ-বিয়োগ করলেও তা তার চাকরির বেতনের সাথে আকাশ-পাতাল অসামঞ্জস্য। আর অবৈধ ইটভাটাটি তার স্ত্রীর বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু স্ত্রীর পেশা কি এবং ইটভাটা করার অর্থের উৎস কি জানতে চাইলে আব্দুল হাই কোন সদুত্তর দিতে পারেননি
Leave a Reply