বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী (ছাত্রী) র্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হলো তা রিট আকারে আনতে বলেছেন। রোববার (২৭ আগস্ট) বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়টি নজরে আনা হয়।
পরে আইনজীবী তামজিদ হাসান জানান, হাইকোর্ট বলেছেন পত্রিকা দেখে আমরা কোনো বিষয় শুনবো না। প্রয়োজন মনে করলে এ বিষয়ে রিট আকারে করতে পারেন। আমরা আগামীকাল র্যাগিংয়ের ঘটনা নিয়ে রিট আবেদন দায়ের করব।
এর আগে এ ঘটনায় কলেজ অধ্যক্ষের কাছে বিচার চাইলেও বিচার পাননি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী; বরং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বক্তব্য নেয়ায় সাংবাদিকদের পিটিয়েছেন কলেজের শিক্ষকরা। গত বুধবার (২৪ আগস্ট) ওই ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হন। এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহের জন্য শনিবার (২৬ আগস্ট) সাংবাদিকরা কলেজে গেলে হামলার শিকার হন তারা।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার কলেজ অধ্যক্ষের কাছে র্যাগিংয়ের বিচার চাইতে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীও। এদিন সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার শাকিল মাহমুদ, চিত্র সাংবাদিক সুমন হাসানসহ চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার হোসেন রানা, চিত্র সাংবাদিক রুহুল আমিন, বাংলা নিউজ ২৪ এর রিপোর্টার মুসফিক সৌরভ, এশিয়ান টেলিভিশনের রিপোর্টার ফিরোজ মোস্তাফা ও চিত্র সাংবাদিক আজিম শরিফ যান তথ্য সংগ্রহে। এ সময় ভুক্তভোগীর বক্তব্য নেয়ায় সাংবাদিকদের মারধর করেন কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. সৈয়দ বাকী বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার সাহা।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা জানান, ভুক্তভোগীরা তাদের বক্তব্য গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরায় হঠাৎ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান দুই চিকিৎসক। এসময় সাংবাদিকদের হাসপাতালের কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে র্যাগিংয়ের শিকার ওই ছাত্রী ও তার পরিবারকে আটকে রাখেন দুই চিকিৎসক।
সময় টেলিভিশনের বরিশাল ব্যুরো রিপোর্টার শাকিল মাহামুদ জানান, ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় হঠাৎ করেই ডা. বাকী ও ডা. প্রবীর হামলা চালান। ক্যামেরা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। হামলার কারণ কি আমরা জানি না। র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
পরে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, দুপক্ষকে বসিয়ে বিষয়টির সমাধান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত বুধবার রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হলের ৬০৬ নম্বর কক্ষে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। হলে অবস্থান করা ডেন্টাল ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহমিদা রওশন ওরফে প্রভা, ৫০তম ব্যাচের নীলিমা হোসেন ওরফে জুঁইয়ের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। তারা নিজেদের ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে সেখানে সংগঠনটির কোনো কমিটি নেই।
Leave a Reply