নিজস্ব প্রতিবেদ:: কোন ভাবেই বেদখল করা যাচ্ছে না তালতলীতে থাকা সরকারী জমি নেপথ্যে কারা? তারা কিভাবে দখল করে রাখে সরকারী জমি তাদের খুটির জোর কোথায়? বরিশাল সদর লাগোয়া ৩নং চরবাড়িয়া ইউনিয়ন অর্ন্তভূক্ত তালতলী বাজার সংলগ্ন সরকারী দীর্ঘদিন ধরে বাজার অবৈধভাবে বাজার বসিয়ে নিয়মিত মাসোয়ারা নিচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা।
এই জমি দখল নিয়ে দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ২ নভেম্বর সংবাদ প্রকাশের পর ওই বছরের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলমুক্ত করেছিল গণপূর্ত বিভাগ। এর পর কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ৯ একর জমি আটকে দেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও রহস্যজনক কারণে নদীর তীরে এক একর জায়গায় বেড়া দেওয়া হয়নি। ওই অংশটুকু আবারো অবৈধভাবে দখল করে মাছের বাজার স্থাপন করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরকারী ভাবে নোটিশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বাজার সরানোর জন্য সেখানে শেখ রাসেল পার্ক বানানো হবে।তার পরিপেক্ষিতে বাজারের স্থানীয় মাছ ব্যাবসায়ী কালু সিকদার,সাবেক ফিরোজ মেম্বার,মিরাজ সিকদার মিলে তালতলী বাজার সংলগ্ন জেলা প্রশাসনের সরকারি জমিতে গণপূর্ত অধিদপ্তর শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বরিশাল জেলা কমিটির সাইনবোর্ড টানিয়ে জমি দখল করে পাশাপাশি একই জমি থেকে মূল্যবান গাছ কেটে নিয়েছে তারা । বর্তমানে তিন জনের একটি চক্র মিলে ওই জমি বালু দ্বারা ভরাট করার পাঁয়তারা করছে। চরবাড়িয়া ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায় যে বি.এস ২৪৪ ২৪৫, ২৪৬ নম্বর দাগের জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
কিন্তু কেন তারা এত মরিয়া হয়েছে কি আছে তালতলি বাজারে?এমন প্রশ্নের জবাবে নাম না করে কয়েক ব্যাবসায়ী জানায় এখান থেকে প্রতি মাসে মাছ বিক্রি করে খাজনা আছে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। খাজনা আদায় করে কালু ও মিরাজ মিলে।আসে তাতে বছরে আসে প্রায় ৬০ লাখ টাকা।কিন্তু এত টাকা যায় কোথায় এমন প্রশ্নে জানায় যারা খাজনা নেয় তারা ভালো জানে।
সরজমিনে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল তালতলিতে সরকারী ভাবে কোন বাজার না থাকায় তারা সরকারী জমি দখল করে বাজার বসিয়ে প্রতি বছর হাতিয়ে নিচ্ছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বেশী।গতকাল জমি ভরাট করার প্রস্তুতি সময় সাংবাদিক উপস্থিত হলে সেখান থেকে ফিরোজ সটকে পড়ে। বালু ভড়াট কাজে দ্বায়িত্ব থাকা নয়ন জানান কালু ভাই আমাদের বালু ভাড়াটের জন্য বলে।আমরা তার অনুমতিতে বালু ভড়াট করতে আসছি, তার কাছে সরকারী জমিতে বালু কোন ব্যাক্তি বালু ভরাট করতে পারবে কি না জানতে চালে সে সটকে পরে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ফিরোজ মেম্বার ও কালু শিকদার বলেন মাছ বাজার থেকে যে টাকা খাজনা আসে তা আমরা সরকারি তহবিলে জমা দেই। আর বর্তমানে মাছ বাজারের জমি সরকারিভাবে পার্ক করার ঘোষণা দিলে পার্শ্ববর্তী সরকারি একটি জমি থাকায় সেখানে মাছ বাজার স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেই আমরা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমরা কাগজপত্র জমা দিয়েছি শীঘ্রই অনুমতি পাব।
কালু সিকদারের কাছে বালু ভরাটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করেছি আর ফিরোজ মেম্বার জানান যে আপনারা চলে সন্ধায় আপনাদের সাথে দেখা করে সমাধান করা হবে।এরপর বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত হলে সন্ধ্যায় সাংবাদিক ম্যানেজে দৌড়ঝাপ শুরু করে মিডিয়া পাড়ায় এ ব্যাপারে নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করে অর্থের প্রলোভন দেয়। কিন্তু এই নিউজ লেখা পর্যন্ত তারা সেখান থেকে সাইনবোর্ড না সরিয়ে বিভিন্ন মহলে বাজার বানানোর তদবির চালাচ্ছে।
চরবাড়িয়া ভূমি অফিসের তহসিলদ্বার সুমন জানান, বিষয়টি তার নজরে আসার সাথে সাথেই তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বলেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানিয়েছেন তিনি। কোন রকম সুযোগ নেই পুকুর ভারাট করে বাজার করার বরিশাল সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছুটিতে আছে স্যার আসার পরে ভূমি দখলদ্বার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন- বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের এসডিকে জানানো হয়েছে। যেহেতু তারা গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মচারী সেহেতু গণপূর্তের উর্ধতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিবে। এরপরেও দখলমুক্ত না হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply