দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে জয় হওয়া ৬২ জনকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বতন্ত্র এমপিদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তাদেরকে কী কারণে ডাকা হয়েছে, সেটি বলেননি তিনি।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয়ের কারণ আওয়ামী লীগের একটি সিদ্ধান্ত। বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ সৃষ্টি করতে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়াতে দলের কাউকে মানা করেনি আওয়ামী লীগ। এবার ৪৬টি আসনে নৌকাকে হারতে হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে। এদের মধ্যে ৪৪ জনই আওয়ামী লীগ নেতা। বাকি দু’টি আসনে নৌকাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে যারা হারিয়েছেন তাদের একজন বিএনপির নির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করে ভোটে অংশ নেন। অন্য জন সিলেটের একটি ধর্মভিত্তিক দলের নেতা। কিন্তু তার দলের নিবন্ধন না থাকায় তাকে ভোটে অংশ নিতে হয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।
সব মিলিয়ে ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগ নেতা।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাতীয় পার্টিও। গত দুটি সংসদের প্রধান বিরোধী দলটিকে ছাড় দিয়ে ২৬টি আসনে নৌকার প্রার্থী তুলে নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু ১৪টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লাঙ্গলের প্রার্থীকে হারিয়ে দেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়েছেন বাকি একজন।
রেকর্ড সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর জয় এবং সংসদে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল জাতীয় পার্টির আসন সংখ্যা ১১টিতে নামার পর সংসদে বিরোধী দল কারা হবে, এ নিয়েও দেখা দেয় প্রশ্ন।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোট করে নিজেদের নেতা নির্বাচন করলে তারাও বিরোধী দলে বসতে পারবেন। তবে বিরোধী দলে বসার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা। দুই সপ্তাহ ধোঁয়াশায় রাখার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল হতে যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২২২টি আসনে। তাদের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল পেয়েছে একটি করে আসন। আওয়ামী লীগের সমর্থনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি জিতেছে একটি।
ভোটের প্রচার চলার সময় নওগাঁর একটি আসনে এক প্রার্থীর মৃত্যুতে সেখানে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। আসনটিতে ভোট হবে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে।
Leave a Reply