ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ের বিনামূল্যে বিতরণ করা পাঠ্যবই কেজি দরে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার মরিচবুনিয়া বাজারে উত্তর পাশের সড়ক থেকে (বরিশাল মেট্রো-ব ১১-০১৬০) নামের ট্রাকটি বইসহ আটক করা হয়।
গোপনে পাঠ্যবই বিক্রয়ের খবর পেয়ে মহল্লাদার মো: সোহেল মিয়া স্থানীয় জনতার সহায়তায় মজুতকৃত পাঠবইসহ ট্রাক আটক করেন।
জানা যায়, আটক করা পাঠ্যবই ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির, যা ২১৫ কেজি। উদ্ধারকৃত পাঠ্যবই পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদে জমা রাখা হয়েছে। গোপনে প্রধান শিক্ষক বই বিক্রি করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিশির দাস।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো: শহীদুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি ও দফতরি না বুঝে পুরাতন বই ও খাতা বিক্রি করছে। বিক্রি করা বই ফেরত আনা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নের তারাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের জম্য দেয়া হয়েছিল। ওই বই স্কুলে মজুদ রাখার বিধান থাকলেও তা না করে বুধবার বিকেলে প্রধান শিক্ষক মো: শহীদুল ইসলাম গোপনে কেজি দরে বিক্রি করেন। বিক্রি করা বই নিয়ে যাবার সময় স্থানীয় জনতার সন্দেহ হয়। খবর পেয়ে মরিচবুনিয়া বাজারের উত্তর পাশের সড়কে বইসহ ট্রাকটি আটক করে মহল্লাদার মো: সোহেল মিয়া।
এ ব্যাপারে মহল্লাদার মো: সোহেল মিয়া জানান, ২০২৩ সনের পাঠ্যবই সংরক্ষণ না করে তা বিক্রি করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে বইসহ ট্রাক আটক করে ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
আটক ট্রাকের ড্রাইভার বাগেরহাট সদরের বাসিন্দা মো: আবদুল্লাহ জানান, এ উপজেলার তারাবুনিয়া গ্রামের মো: রুবেল হাওলাদার নামের একজন তাকে বই নিয়ে ঢাকা যাবার জন্য ভাড়া করে। তারাবুনিয়া হাই স্কুল থেকে ২০২৩ সালের ২১৫ কেজি বই কিনেছে রুবেল।
এ ব্যাপারে রুবেল হাওলাদার জানান, প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম সরকারি বই বিক্রি করে এখন অস্বীকার করছেন।
অফিস সহকারি ও দফতরির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান শিশির দাস জানান, মরিচবুনিয়া এলাকার মহল্লাদার মো: সোহেল স্থানীয় লোকজন নিয়ে সরকারি বইসহ একটি ট্রাক আটক করে তার পরিষদের নিয়ে আসে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আনোয়ার আযিম জানান, সরকারি বই বিক্রি করার কোনো বিধান নেই। বিক্রি করা বই ফেরত নেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: নেছার উদ্দিন জানান, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
Leave a Reply