চীনের সাং সাই এর বাসিন্দা চিকিৎসক লি সি জাং। বাংলাদেশি তরুণীর প্রেমের টানে এসেছেন নাটোরে। নিজ ধর্ম ত্যাগ করে স্থানীয় মসজিদের ইমামের মেয়েকে করেছেন বিয়ে। মোবাইল অ্যাপ (উই চ্যাট) এর মাধ্যমে নাটোরের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে প্রায় ৬ মাস আগে পরিচয় হয় চীনের বাসিন্দা লি সি জাং এর। এরপর শুরু হয় বন্ধুত্ব। তারপর তা গড়ায় প্রেমের সম্পর্কে। শেষ পর্যন্ত প্রেমের টানে নাটোরে এসে প্রেমিকা ফাতেমা খাতুনকে বিয়ে করেছেন লি সি জাং।
ফাতেমার পারিবারিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশি তরুণীর ভালোবাসা পেতে নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছেন চীনা যুবক লি সি জাং। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে চীন থেকে নাটোর সদর উপজেলার লক্ষিপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের ফাতেমাদের বাড়িতে আসেন লি সি জাং। এসে সবার সামনে বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করেন। পরে মুসলিম রীতি অনুসারে বিয়ে করেন ফাতেমাকে। নিজের নতুন নাম রাখেন আলী।
ফাতেমা বলেন, আমাকে ভালোবেসে লি সি জাং বাংলাদেশে এসেছে। সে আমার জন্য তার নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছে। সুখে-দুঃখে আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। এসময় তিনি তার স্বামীর সঙ্গে তাদের (চীন) দেশে চলে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন।
নিজেকে চিকিৎসক দাবি করে লি সি জাং ওরফে আলী বলেন, এ বিয়েতে আমি খুব খুশি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষের জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করেছি। আমি আশাবাদী আমার ভালোবাসার মানুষ সারাজীবন আমার পাশে থাকবে।
ফতেমা খাতুনের বাবা আবু তাহের জানান, তার মেয়ে বিদেশি পুরুষকে বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করে। তাই স্থানীয় ভাবে বিয়ের প্রস্তাব আসলেও সে রাজি হয়নি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করতে চেয়েছে তাই বৃহস্পতিবার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিয়ে পড়ানো হয়েছে। শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রোববার আদালতের মাধ্যমে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। রোববার সকালে আদালতে চীনা যুবক লি সি জাং এর ধর্ম পরিবর্তনের এফিডেভিট ও বিয়ে রেজিস্ট্রি করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আদালত চত্বরের কাজি ও জেলা কাজি সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ রিয়াজুল হক মমিন।
নাটোর সদর উপজেলার লক্ষীপুর খোলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা নুরুজ্জামান কালু বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে সম্পর্কের পর তাদের বিয়ে হয়েছে বলে জেনেছি। মেয়েটি আগে থেকেই বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখত। বিদেশ থেকে ছেলে বা মেয়েরা এসে বাংলাদেশে বিয়ে করছে বিভিন্ন এলাকার এমন খবর মিডিয়ায় দেখলেও আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম। তাদের দেখতে ফাতেমাদের বাড়িতে আসছেন এলাকাবাসী। এমন বিয়ে এলাকার মানুষ কখনো দেখনি বলে তাদের আগ্রহটা অনেক বেশি। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
Leave a Reply