মিলন কান্তি দাস, নলছিটি,ঝালকাঠি।। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবথেকে বড়ো উৎসবের প্রস্তুতির শেষদিকে রং তুলিতে মন্দিরে মন্দিরে চলছে দুর্গা প্রতিমা সজ্জার কাজ।
প্রতি বছরের মতো এবারেও নলছিটির ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ২৩টি মন্দিরে দুর্গা পুজোর আয়োজন করেছে সনাতন ধর্মালম্বীরা। একমাস আগে থেকেই শুরু করেছে মন্দির
সজ্জা ও প্রতিমা তৈরির কাজ। সবার মধ্যেই এই বৃহৎ উৎসবকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকানে দোকানে চলছে নতুন জামা কাপড় কেনার ধূম।
প্রিয়ন্তি কুন্ড ও প্রাপ্তি কুন্ড জানায় এবার পুজোতে তারা দাদার সাথে বরিশাল গিয়ে দুটো করে জামা কিনেছে। পুজোর পাঁচ দিনের জন্য রয়েছে তাদের নানান পরিকল্পনা। শিক্ষার্থী সৌমি-মৌমি জানান তাদের বাবা ছাড়াও কাকা-পিসি,দিদি-দাদাবাবুরা অনেকগুলা নতুন জামা কিনে দিয়েছে। পুজোর প্রতিদিনই তারা নতুন পোশাক পড়ে আনন্দ করবে।
কাপড় ব্যবসায়ী সুনীল মন্ডল বলেন নলছিটি শহর থেকে ঝালকাঠি ও বরিশাল কাছে হওয়ার কারনে বেশিরভাগ ক্রেতাই সেদিকে চলে যায়। তারপরও বেঁচাকেনা ভালোই চলছে। নলছিটির সব থেকে পুরনো মন্দির শ্রী শ্রী তারা মন্দির কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক বলেন আমাদের পুজোর প্রস্তুতি শেষের পথে। কমিটির সবাই নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা বলেন তাদের মন্দির সুরক্ষার জন্য পাঁচটি সিসি ক্যামেরা যুক্ত করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময়ই খোঁজ খবর নিচ্ছন । উপজেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জনার্ধন দাস বলেন আমাদের সবথেকে বড়ো ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গ পুজো। ইতোমধ্যেই আমরা বিভিন্ন পুজো মন্দির পরিদর্শন করেছি। প্রসাশনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে বৈঠক করেছি। নলছিটির ২৩টি মন্দিরে পুজো হবে আমার বিশ্বাস এখানে কখনও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনী। প্রতি বছরের মতো এবারেও আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা এই উৎসব পালন করবো।
নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ মো.মুরাদ আলী জানান আমিসহ আমার অফিসার ইতোমধ্যেই সবকটি পুজো মন্দির পরিদর্শন করেছি। কমিটির লোকজন সাথে একাধিকবার মিটিং করেছি। নলছিটির সার্বিক পরিস্থিতি ভালো। তার পরেও আমরা সচেতন আছি। সনাতন ধর্মের এই বৃহৎ উৎসবের আয়োজন সুন্দর ও নিরাপদ রাখতে নলছিটি থানা পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সকল পূজা মন্দির সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট মন্দির কর্তৃপক্ষ স্বতঃস্ফূর্ত সম্মত হয়েছেন।ইতেমধ্যে অধিকাংশ মন্দিরে সিসিটিভি লাগিয়েছে। তিনি সকলকে আগাম শুভেচ্ছা জানান।
নলছিটির উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.নজরুল ইসলাম বলেন উপজেলার ২৩টি মন্দিরে দুর্গ পুজো অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমর প্রস্তুতি ও অগ্রগতির বিষয় নিয়ে অনেকবার আলোচনা করেছি। পূজা উদযাপন পরিষদ, মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং করেছি। পুজোর পাঁচ দিন আমরা সচেতন থাকবো। এখানকার সার্বিক পরিবেশ ভালো বলেই মনে করছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দশটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার সব মন্দির পরিদর্শন করেছি। মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দকে মন্দির এলাকায় সিসিটিভি লাগানোর পরামর্শ দিয়েছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
Leave a Reply