সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবীর ৫৬ কোটির অবৈধ সম্পদ সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবীর ৫৬ কোটির অবৈধ সম্পদ – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : ajkal1 : ajkal1
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৩:০৭ অপরাহ্ন

সাবেক আইনমন্ত্রীর বান্ধবীর ৫৬ কোটির অবৈধ সম্পদ

আজকাল ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
  • ১৯ সময় দর্শন

সিটিজেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান তৌফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমের স্থাবর-অস্থাবর ৫৬ কোটি টাকারও বেশি অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে অস্থাবর সম্পদ ৪০ কোটি টাকা ও স্থাবর সম্পদ ১৮ কোটি টাকা। তৌফিকা করিম পরিচিতি সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বান্ধবী হিসেবে। দুদকের অনুসন্ধান দল শিগগির তার বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে। দুদকের একজন পরিচালক কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া তৌফিকার স্বামী আফতাবুল ইসলামের নামেও চলছে পৃথক অনুসন্ধান।

জানা গেছে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে আনিসুল হক আইনমন্ত্রী থাকার সময়ে বিচারাঙ্গনের অঘোষিত ‘নিয়ন্ত্রক’ ছিলেন তৌফিকা করিম ওরফে তৌফিকা আফতাব। আনিসুল হকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় উচ্চ আদালত থেকে নিম্ন আদালত সবখানেই তার দাপট। বিচার বিভাগে তিনি গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব বলয়। গুরুত্বপূর্ণ মামলায় প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো রায় করিয়েছেন এই তৌফিকা। চাপ প্রয়োগ করে জামিনও করিয়েছেন অনেক চাঞ্চল্যকর মামলা আসামির।

এর আগে দুদক তৌফিকার ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। সেসব হিসাবে ৪৩ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৬০ টাকা স্থিতি পাওয়া গেছে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় একটি বিলাসবহুল বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও সিটিজেনস ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে ২৩ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৭ টাকা এবং সিটিজেনস ব্যাংকে ৫ কোটি টাকার শেয়ার থাকার তথ্য পেয়েছে কমিশন।

তৌফিকা করিম ছিলেন সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। সিটিজেন ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ৪০০ কোটি টাকা জামানত এবং ২০০ কোটি টাকা চলতি মূলধন দিয়ে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করেন আনিসুল হক। প্রথমে তার মা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন। আনিসুল হকের মায়ের মৃত্যুর পর বহুল আলোচিত তৌফিকা করিমকে চেয়ারম্যান করা হয়। এই তৌফিকা করিম ছিলেন আনিসুল হকের চালিকাশক্তি। তিনি যা বলতেন তা-ই করতেন আনিসুল হক। এই তৌফিকা করিমের ছেলে ও মেয়েকে কানাডায় বাড়ি করে দিয়ে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। প্রাইভেট একটি টেলিভিশন কোম্পানিতেও তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি কিছুদিন ওই টেলিভিশনের নির্বাহী চেয়ারম্যান ছিলেন। গতবছরের ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিটি ব্যাংকের পদ ছাড়েন তৌফিকা। তাকে ওই টেলিভিশন থেকেও তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

দুদকের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আনিসুল হকের তদবির নিয়ন্ত্রণ করতেন তার ব্যক্তিগত সহকারী অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া জীবন। আনিসুল হকের কাছে থাকা তদবিরের অর্থ লেনদেন হতো গুলশানের অফিসে। জীবন কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর তদবিরের টাকা লেনদেনের দায়িত্ব পান আনিসুল হকের বান্ধবী খ্যাতি পাওয়া তৌফিকা করিম। আনিসুল হকের এক ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে বড় বড় দুর্নীতি মামলায় পক্ষে রায় নেওয়া বা আসামিদের জামিনের গ্যারান্টি দিতেন। টাকার বিনিময়ে বিচারপতি নিয়োগ, সাব-রেজিস্ট্রার বদলি ও পদায়নের বহু ঘটনা রয়েছে। তার মাধ্যমে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি জেলা জজ, বহু অযোগ্য আইনজীবীকে বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সেসব নিয়োগের প্রস্তাবে লেখা থাকত ‘প্রধানমন্ত্রীর ডিজায়ার’। এ ছাড়া প্রায় সব জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা জজ নিয়োগে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করেছে এই সিন্ডিকেট। অবৈধভাবে অর্জিত টাকা পাচার হয়েছে কানাডাসহ অনেক দেশে।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, আনিসুল হক ও তৌফিকা আওয়ামী লীগের শেষ ১০ বছরে অবৈধভাবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে। কিন্তু আমরা পর্যাপ্ত প্রমাণ পাচ্ছি না। তৌফিকা আফতাবের এক ছেলে থাকেন কানাডায়। পাচার করা অর্থ দিয়ে কানাডায় বিপুল সম্পদ গড়েছেন। তার স্বামী আফতাবুল ইসলাম এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক পদে বহাল আছেন। এ ছাড়া তার স্বামী আফতাবুল ইসলামেরও নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেখানেও বেনামে তৌফিকার বিপুল বিনিয়োগ থাকার বিষয়ে সন্দেহ করছে কমিশন।

দুদকের পাঁচ সদস্যদের অনুসন্ধান দলের প্রধান ও উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন, ‘তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শিগগির কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করব।

এ ছাড়া তৌফিকা করিমের অর্থ পাচার নিয়ে পৃথক তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর