বরিশালে রিমান্ডে নাড়ী আসামিকে যৌন হয়রানি ও নির্যাতন বরিশালে রিমান্ডে নাড়ী আসামিকে যৌন হয়রানি ও নির্যাতন – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : ajkal1 : ajkal1
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১০:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বরিশালের সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় পরিচালক স্বাস্থ্যর বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরন বরিশালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৪ কর্মকর্তা বরখাস্ত আন্দোলনকারীরা ‘শাটডাউন’ করুক, কোনো বৈঠক হবে না: অর্থ উপদেষ্টা ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ ৫ আগস্ট, ‘জুলাই শহীদ দিবস’ ১৬ জুলাই ছাত্রলীগ সভাপতি সুমনের নেতৃত্বে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও করা হয় গণতন্ত্র বাঁচাতে জিয়া কমিশন গঠন জরুরি দ্বিতীয় দিনের মতো এনবিআরে শাটডাউন চলছে, রাজস্ব আদায় ব্যাহত গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

বরিশালে রিমান্ডে নাড়ী আসামিকে যৌন হয়রানি ও নির্যাতন

আজকাল ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১
  • ১০৬ সময় দর্শন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ বরিশালের উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নিয়ে হত্যা মামলার নারী আসামিকে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট আদালতে রিমান্ড শেষে হাজির হয়ে নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগসহ বর্ণনা তুলে ধরেন মিতু অধিকারী ওরফে মিনতি বিশ্বাস (৩০) নামের ওই নারী। আদালতের বিচারক মাহফুজুর রহমান আসামির অভিযোগ আমলে নিয়ে নির্যাতন এবং হেফজতে মৃত্যুর ধারা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে মিতুর দেহ পরীক্ষা করে জখম ও নির্যাতনের চিহ্ন এবং নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত শুক্রবার রাত ১০টায় শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয় মিতু অধিকারীকে। পরে তাকে হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসি সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়। সেখানে ৫ ঘণ্টার চিকিৎসা শেষে রাত ৩টায় তরিঘরি করে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে বরিশালে।

মিতুর ভাই উত্তম অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, উজিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয় মিতুকে। এরপর গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরপরই এক নারী পুলিশ সদস্য লাঠি দিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায় মিতুর ওপর। পরবর্তীতে আশেপাশে উপস্থিত থাকা সার্কেল এসপিও তাকে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করেন। এরপর কারাগারে প্রেরণ করা হয় এবং গত ৩০ জুন দুই দিনের রিমান্ডের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়।

মিতুর ভাই বলেন, থানায় আনার দিন তাকে কোনো মারধর না করা হলেও পরদিন সকালে (১ জুলাই) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার রুমে পাঠানো হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল মিতুর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এরপর এক নারী পুলিশ সদস্যকে ডাকলে তিনি এসে মিতুকে লাঠি দিয়ে হাতে, পায়ে এবং পিঠে নির্যাতন চালায়। ওই নারী পুলিশ সদস্যের নির্যাতন পছন্দ না হওয়ায় এক পর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই হাতে লাঠি তুলে নেন এবং মিতুকে পেটাতে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, ১৫ থেকে ২০ মিনিট পেটানো হয়। এরপরে অজ্ঞান হয়ে যায় মিতু। যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন নিজেকে হাসপাতালে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। হাসাপাতালে নেয়ার আগে ২ দিন তাকে থানায় আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে মিতু অধিকারীকে ফের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ওসির রুমে নিয়ে হাজির করা হয়।

“তখন পুলিশের কোনো এক ঊর্ধতন কর্মকর্তা তাকে খুনের অপরাধ স্বীকার করার আদেশ দেন। তাকে আশ্বস্ত করা হয় খুনের স্বীকারোক্তি দিলে মিতুর কিছু হবে না। তখন মিতু অধিকারী তার সেই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। মিতু বর্তমানে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। এ অভিযোগ মিতু বিচারককেও জানিয়েছেন। আমরাও লিখিত আকারে বিষয়টি বিচারককে অবহিত করে বিচারের দাবি জানালে বিচারক তদন্তের নির্দেশ দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছেন।”

মিতুর ভাই আরো বলেন, এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য হুমকি দেন থানার পুলিশ সদস্যরা। এমনকি এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য স্থানীয় একজন সাবেক এমপিকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম আসামিকে চিকিৎসা প্রদান ও আদালতের নির্দেশনার কথা স্বীকার করেছেন।

মিতুর আইনজীবী মজিবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের হেফাজতে আসামি মারা যাচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে মিনতুকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আরজি করা হয়েছিলো। আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সতর্কতার সাথে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ মিতুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক এবং স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতন করেছে; যা যৌন নির্যাতনের শামিল। এটা গুরুতর অন্যায়। তিনি বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।

বরিশাল জেলা মানবাধিকার জোটের যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মিতু অধিকারীকে রিমান্ডের সময় শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তিনি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, রিমান্ডে নারী আসামিকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, থানায় রিমান্ডের সময় মিতু অধিকারীকে শারীরিক কিংবা যৌন নির্যাতন করা হয়নি। রিমান্ডে নিলে সবাই পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই বরুন চক্রবর্তী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি হিসেবে মিতুেেক ওইদিন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলি আদালত মিতুর ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই মিতুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর