নিজস্ব প্রতিনিধিঃঃ বরিশালে সন্তানদের কাছ থেকে ভরণপোষন না পেয়ে দুই সন্তানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন জাহানুর বেগম (৭৫) নামের এক বৃদ্ধা জননী। বৃদ্ধা জাহানুর নগরীর বৈদ্যপাড়ার জোড়াপুকুরপাড় এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। মামলার আসামীরা হলেন- বৃদ্ধার ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেয়ে সাবিনা আক্তার।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৃদ্ধা জাহানুর বেগম খুলনায় স্বামীর সাথে বসবাস করতেন। ২০১৪ সালের ১৪ নবেম্বর স্বামীর মৃত্যুর পর রোগাক্রান্ত হয়ে পরেন। সর্বশেষ ব্রেইন ষ্ট্রোক, মেরুদন্ড অচল, পিঠে ক্ষত ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে পরলে চিকিৎসার জন্য খুলনায় স্বামীর রেখে যাওয়া জমি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

গত ২২ অক্টোবর তার ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেয়ে সাবিনা আক্তার বরিশালে এসে তাকে (বৃদ্ধা মা) জমি বিক্রি করতে দেবেন না বলে জানায়। এসময় সে (বৃদ্ধা মা) ওই দুই সন্তানের কাছে ভরণপোষনের দাবী করলে তারা বৃদ্ধা মায়ের সাথে খারাপ আচরন করে চলে যায়। এরপর থেকে ওই দুই সন্তানের মধ্যে কেউ আর তার মায়ের খোঁজ রাখেননি। মামলায় আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ও ভরণপোষনের আবেদন করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ জানান, পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ এর ৫ ধারায় বৃদ্ধা জাহানুর বেগম তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান এবং মেয়ে সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে বরিশাল অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বৃহস্পতিবার বাহকের মাধ্যমে ওকালতনামাসহ নালিশি দরখাস্ত প্রেরন করেন। এসময় বিচারক বাদী পক্ষের আইনজীবী ও নালিশী দরখাস্তের বাহককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারেন বাদী শয্যাশায়ী হওয়ায় আদালতে আসতে পারেননি।

পরবর্তীতে আদালতের শেষ কার্যদিবসে বিচারক মাসুম বিল্লাহ বৃদ্ধার আইনজীবি এবং তাকে (সাজ্জাদ পারভেজ) নিয়ে অসুস্থ বৃদ্ধার বাসায় যান। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় মামলাটি গ্রহন করে সমন জারির পাশাপাশি আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে আসামীদের আদালতে স্ব-শরীরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস জানান, বিচারকদের এ জাতীয় পদক্ষেপ মানুষের দোরগোড়ায় বিচার পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।