বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খানকে ছাত্রলীগের স্থানীয় কয়েকজন কর্মী কুপিয়ে জখম করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে আমতলী শহরের আল হেলাল মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আমতলী উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগেরও সাবেক সভাপতি। তাঁকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে আমতলী শহরে তাৎক্ষণিক ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও শ্রমিক লীগ নেতা-কর্মীরা আমতলী চৌরাস্তায় বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা মোয়াজ্জেম হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা আমতলী-কুয়াকাটা মহাসড়কে শতাধিক পরিবহন আটকালে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আমতলী থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমানের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে আমতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবুর রহমান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন খান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে মজিবুর রহমান বিজয়ী হন। এ নিয়ে এর পর থেকেই মোয়াজ্জেম হোসেন খানের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের রোষানলে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাত পৌনে নয়টার দিকে মোয়াজ্জেম হোসেন খান আমতলী পৌর এলাকার আল হেলাল মোড়ে যান। সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সবুজ ম্যালকার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখার আহম্মেদ ওরফে তোহা, সদস্য শাহাবুদ্দিন ওরফে সিহাব, রুহুল আমিনসহ আর কয়েকজন মোয়াজ্জেম হোসেন খানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকে কুপিয়ে সড়কে ফেলে রেখে যায়।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মো. সুমন বিশ্বাস জানান, তাঁর বাম পা, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে। মোয়াজ্জেম খানকে জখম করার ঘটনা ছড়িয়ে পড়েলে শহরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
আহত মোয়াজ্জেম খান বলেন, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেনের নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসী তাঁর ওপর হামলা চালায়। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মজিবুর রহমান।
আমতলী পরিদর্শক (তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, অবরোধকারীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমান রাতে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার কিংবা আমার পরিবারের কারও সম্পৃক্ততা নেই। আমি ওসিকে বলেছি, যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনতে। যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁরা সন্ত্রাসী। এসব সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’
Leave a Reply