।।নিজস্ব প্রতিনিধি।।পটুয়াখালীতে ট্রাফিক সার্জন ও থানা পুলিশের এক এসআইয়ের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন মো. শামীম হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক। মারধরের পরপরই ভুক্তভোগীকে মুখ বন্ধ রাখতে হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
মারধরের শিকার শামীম পেশায় মোটর মেকানিক। তিনি বর্তমানে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- পটুয়াখালীতে কর্মরত ট্রাফিক পুলিশের সার্জন মো. হাসান ও মির্জাগঞ্জ থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান। গত ১০ মার্চ দুপুরে মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটেছে। যদিও এসব প্রসঙ্গ ভিন্নখাতে নিতে চাচ্ছেন অভিযুক্তরা।
সার্জন হাসান বলেন, তেমন কিছু হয়নি, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। মারধরের প্রসঙ্গ জানতে চাইলে তিনি বলেন-পরে সব বুঝিয়ে বলব এখন ব্যস্ত আছি।
ভিকটিম শামীম হোসেন বলেন, মির্জাগঞ্জ উপজেলা সুবিদখালীতে তার একটি মোটরসাইকেল মেরামতের গ্যারেজ রয়েছে। ওই গ্যারেজের সামনে মোটরসাইকেল পার্কিং নিয়ে চায়ের দোকানি মনির ও রফিকের মধ্যে বাগবিতণ্ডা চলছিল। তা দেখে মীমাংসা করতে গেলে ওই স্থানে অবস্থানরত ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট হাসান তাকে বলেন- ‘তুই এখানে এসেছিস কেন এবং অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ শুরু করেন। একপর্যায় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই চর-থাপ্পড় এবং লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন। মারধরের শিকার হয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বরিশাল নেওয়ার পরামর্শ দেন। সার্জন হাসানের চর-থাপ্পড়ে তার বাম কানে শুনতে পান না বলে তিনি জানান।
শামীম আরও বলেন-সার্জন হাসানের মারধরের পর থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান তার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে তাকে পুনরায় পেটান এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুমকি দেন।
একই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। প্রত্যক্ষদর্শী চায়ের দোকানি মো. হাসান, মনির ও রফিক বলেন, অকারণে উত্তেজিত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. হাসান শামীমকে মারধর করেন। এতে তারা প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন সার্জন হাসান ও এসআই সিদ্দিক।
অপর অভিযুক্ত মির্জাগঞ্জ থানার এসআই সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত শুক্রবার আমি টহল ডিউটিতে ছিলাম। মাজার জিয়ারতে ভক্ত আসায়, অনেক যানজট পড়েছে। এ সময় যানজটে আটকে থাকা ব্যক্তিরা নিয়ম ভেঙ্গে গাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে তাদের সঙ্গে একমত হয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন শামীম। এর বাইরে কিছুই জানি না। আমি কাউকে মারিনি।
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে যদি পুলিশ সদস্য অপেশাদারিত্বমূলক কোনো আচরণে জড়িয়ে পড়েন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply