মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ আসামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।এ ছাড়া অপর দণ্ডবিধি ৩৯৪ ধারার অপরাধে আসামীদের দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন। এ সময় আসামীদের পুলিশ পাহারায় আদালতে হাজির করা হয়।গ্রেফতারের পর থেকেই আসামীরা জেল হাজতে আছেন।দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মো:মিলন শিকদার(৩৪), মো:ফয়সাল(২৮) ও মো: নাজির হোসেন মোড়ল।আসামী মিলন শিকদার লৌহজং উপজেলার উত্তর মসদগাঁও গ্রামের মৃত নাজির আহমেদ শিকদারের ছেলে।মো:ফয়সাল একই এলাকার মিলন খানের ছেলে।মো:নাজির হোসেন মোড়ল একই গ্রামের মৃত বাদশা মোড়লের ছেলে।আদালতের ব্রেঞ্চ সহকারী মো:হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে,নিহত আ.বারেক শেখ(৪৪)টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সহকারী উদ্যোক্তা ছিলেন। গত ২০২১ সালে ৭ জানুয়ারি সকালে আ.বারেক শেখ বাসা থেকে তার অফিসের উদ্দেশে বের হন।পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টংঙ্গীবাড়ী থানা পুলিশ নিহতের বাবা মোস্তফা শেখ মোড়লকে জানায় আ.বারেক শেখ জখম অবস্থায় পড়ে আছে।পুলিশ জানায়,ঘটনার দিন আসামীরা লৌহজং উপজেলা থেকে পাশের টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারে মোটরসাইকেলযোগে এসে ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেয়।তাদের একজন ব্যাংকে ঢুকে বেশি টাকা উত্তোলনকারীকে শনাক্ত করতে থাকে।অপর দুইজন ব্যাংকের সামনে অবস্থান করতে থাকে।ওই সময় নিহত আবদুল বারেক শেখ ব্যাংক থেকে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে টাকা উত্তোলন করে অটোরিকশাযোগে টংঙ্গীবাড়ী বাজারের দিকে রওনা করে।তখন আসামীরা মোটরসাইকেলযোগে অটোরিকশাটিকে অনুসরণ করতে থাকে।পরে অটোরিকশা টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার বলই টু তোলকাই গামী ব্রীজের মাঝামাঝি নির্জন স্থানে পৌঁছালে আসামীরা অটোরিকশাটি থামিয়ে ভিকটিমকে নামতে বলে।তিনি নামতে না চাওয়ায় আসামী ফয়সাল তার হাতে থাকা চাকু দিয়ে নিহতের কাঁধের বাম পাশে আঘাত করে।ভিকটিম অটোরিকশা থেকে পড়ে গেলে আসামী মিলন তার পিঠের বাম পাশে আঘাত করে।এরপর ভিকটিমের সাথে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়।আসামীদের আঘাতের ফলে ঘটনাস্থলেই ভিকটিম মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোস্তফা বাদী হয়ে টংঙ্গীবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে।এ ছাড়া আসামীদের গ্রেফতারের পর আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।পরে ৩ আসামীকে ৩০২ ধারার অপরাধে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া দণ্ডবিধির ৩৯৪ ধারা অপরাধে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা,অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
Leave a Reply