নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ বরিশালে এক শিক্ষক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাস্তায় এক কিশোরী গৃহকর্মীকে ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। চুলের মুঠি ধরে তাকে রাস্তায় ফেলে পদদলিত করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ ঘটনায় প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ করায় তাদেরও দেখে নেয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে নির্যাতিত ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে প্রেরণ করে পুলিশ।
নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর নাম মরিয়ম (১৪)। সে নেত্রকোনার দুর্গাপুর এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে। শিক্ষকের মেয়ে তমার মাধ্যমে গত শনিবার ওই বাসায় কাজে যোগ দেয় সে।
নির্যাতিতা মরিয়ম জানায়, বাসা থেকে ১০ ভতি স্বর্ণালংকার এবং ১০ লাখ টাকা খোয়া গেছে অভিযোগ তুলে গত ১ সপ্তাহে বেশ কয়েকবার তাকে নির্যাতন করে গৃহকর্তী। নির্যাতনের মুখে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। আশপাশের বিভিন্ন বাসায় আশ্রয় চাইলেও হয়রানির আশঙ্কায় তাকে কেউ আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি। বাধ্য হয়ে রাত ১১টার দিকে গৃহকর্তার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সে। এ সময় গৃহকর্তা নগরীর সাগরদী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী এবং মেয়ে তমা ওই কিশোরীকে প্রকাশ্য রাস্তায় চুলের মুঠি ধরে পদদলিত করা সহ ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করে। এর আগেও গৃহকর্তী কয়েকবার তাকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ মরিয়মের।
কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ প্রথমে অস্বীকার করলেও জেরার এক পর্যায়ে তাকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করেন গৃহকর্ত্রী। তিনি বলেন, ওই কিশোরী একটি ছেলের সাথে প্রেম করে। সে সুযোগ পেলেই পালিয়ে মুঠোফোনে কথা বলে সে। এ কারণে তাকে সামান্য মারধর করা হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রতিবেশীদের হুমকি দেয়ার কথা অস্বীকার করেন গৃহকর্তা প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির।
ওই কিশোরী পুলিশের সামনে সাংবাদিকদের কাছে তাকে নির্যাতনের বর্ণনা দিলেও কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রোকমান হোসেন বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি নির্যাতনের বিষয়টি পুরোপুরি আড়াল করার চেষ্টা করেন।
যদিও এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম।
Leave a Reply