নিজস্ব প্রতিনিধিঃঃবরিশাল নগরীতে পূত্রবধূর স্বর্ণ ও নগদ টাকা আত্মসাৎ করে মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি সালেহার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের জাগুয়া গ্রামে। ২৮ জুলাই রাতে গৃহবধূ সোনিয়াকে (৩২) বিষ খাওয়ালে ৩১ তারিখ সকালে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সোনিয়ার মৃত্যুর পরপরই তার স্বামী অটোরিক্সা চালক হাকিম, শাশুড়ি সালেহা, ননদ মুকুলি ও ননদের স্বামী মিজান, ভাসুর হারুন এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত সোনিয়ার ভাই সুমন বাদী হয়ে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দয়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর ২৬নং ওয়ার্ড কালিজিরার জাগুয়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত সুলতান ড্রাইভারের মেয়ে সোনিয়ার প্রায় ১৬ বছর আগে বিয়ে হয় তারা ফুপাতো ভাই হাকিমের সাথে। বিয়ের এক বছরের মাথায় সংসারে অভাব দেখা দিলে সোনিয়া ঢাকায় একটি গার্মেন্টস কোম্পানিতে চাকুরি নেয়। এর মধ্যে তাদের তিনটি কন্যা সন্তান হয়। গার্মেন্টস কোম্পানিতে ৮ বছর চাকুরি করে যে টাকা জমিয়েছে সে টাকার কিছু অংশ দিয়ে মেয়েদের ভবিৎষতের জন্য স্বর্ণ কিনে এবং বাকি নগদ টাকাসহ সব শাশুড়ির কাছে জমা রাখেন। এর কিছু দিন পরে সোনিয়া বিদেশ চলে যয়। বিদেশে উপার্জিত সব টাকা দেশে তার স্বামী হাকিমের কাছে পাঠায়। কিছু দিন আগে সোনিয়া বিদেশ থেকে এসে তার শাশুড়ির কাছে জমা রাখা ৭লক্ষ ৪০হাজার নগদ টাকা এবং ৫ ভরি স্বর্ণ ফেরত চায়। সোনিয়ার শাশুড়ি সালেহা আজ না কাল দেব করে একপর্যায় বলে টাকা ও স্বর্ণ হারিয়ে গেছে। তোমাকে ২শতাংশ জমি লিখে দেব। কিন্তু সোনিয়া বলে আমার মেয়েদের জন্য জমিয়েছি আমার টাকা ও স্বর্ণ দেন। এর পর থেকেই সোনিয়ার ওপরে তারা স্বমী ও তার স্বামীর পরিবারের লোকজন অমানুষিক অত্যাচার শুরু করে।
একপর্যায় সোনিয়া জানতে পারে তার টাকা দিয়ে ভাসুর জমি ও অটোরিক্সা কিনেছে আর স্বর্ণ বিক্রি করে দিয়েছে তার শাশুরী। এ নিয়ে একটি সালিস বৈঠক হলে সেখানে সোনিয়ার শাশুড়ি টাকা ও স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার কথা স্বীকার করে। এর কিছুদিন পরে অর্থাৎ ২৭জুলাই সোনিয়া তার বড় ভাই চান্দুকে জানায় তার স্বামী হাকিম, শাশুরী সালেহা, ভাসুর হারুন, ননদ মুকুলি ও ননদের স্বামী মিজান মিলে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। এর পরের দিন ২৮ জুলাই ভোর রাতে সোনিয়ার স্বামী চান্দুকে ফোন করে বলে সোনিয়া বিষ খেয়েছে। পরে সোনিয়াকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১জুলাই মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সোনিয়ার ভাই সুমন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দয়ের করেন।
এ বিষয়ে ২৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বলেন, সোনিয়ার টাকা ও স্বর্ণ তার স্বামী এবং তার পরিবারের লোক মিলে আত্মসাৎ করেছে। এ বিষয়ে আমার কাছে বিচার দিলে আমি টাকা ও স্বর্ণ ফেরত দিতে বলি। তবে সোনিয়ার স্বামী হাকিম ও তার পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে গাঢাকা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, আসামীরা কেউ পালিয়ে বাঁচতে পরবেনা। এ মামলাটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা এর নিক্ষুত তদন্ত করছি। অপরাধীরা কোন ভাবেই রেহাই পারবে না।’
Leave a Reply