নিজস্ব প্রতিনিধি::বরিশালে বাড়ি নির্মাণে চাঁদা না দেওয়ায় ইটের আঘাতে আফিয়া খানম (৪৫) নামে এক নারী নিহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে নিহতের স্বামী গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দিলে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয় বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমলেশ হালদার। এজাহারে তাওহীদ হোসেন মনুকে এক নম্বর ও তার স্ত্রী নিপু আক্তারকে দুই নম্বর এবং জুম্মান ও মিরাজকে আসামি করে মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
নিহতের স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সার্জেন্ট গিয়াস উদ্দিন অভিযোগ করেন, রোববার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নগরীর ফিসারী রোডে ভাড়া বাসায় তাকে ও তার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে স্থানীয় সন্ত্রাসী তাওহীদ হোসেন মনু ও তার সহযোগীরা।তার অভিযোগ, ভাড়া বাসার পাশেই ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে সেখানে বাড়ি নির্মাণে উদ্যোগী হন তিনি। কিন্তু বাড়ি করার সকল ইট, বালু, সিমেন্ট, রড স্থানীয় সন্ত্রাসী তাওহীদ হোসেন মনুর কাছ থেকে কিনতে বাধ্য করার চেষ্টা চালায় মনু। কিন্তু মনুর এই সংক্রান্ত দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই বিধায় বাড়ি নির্মাণের সামগ্রী কিনতে অস্বীকৃতি জানায় গিয়াস উদ্দিন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাওহীদ হোসেন মনু চাঁদা দাবি করেন বলে জানায় গিয়াস। চাঁদা দিতেও অস্বীকৃতি জানালে, সন্ত্রাসী মনুর স্ত্রীকে মুঠোফোনে বাজে কথা বলার নাটক সাজিয়ে রোববার সন্ধ্যায় তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন গিয়াস উদ্দিন। বাসার গেটে দাঁড়িয়ে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি ও লাঠি দিয়ে পেটানো হয় গিয়াসকে। সেসময় গিয়াসের স্ত্রী তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও ইট দিয়ে আঘাত করায় স্ত্রী আফিয়া খানম অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় স্ত্রীকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাতেই ডা. আফিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।এদিকে, তাওহীদ হোসেন মনু ঘটনার পর থেকেই পলাতক।
মনুর বড় ভাই হুমায়ুন কবির দাবি করেন, মনুর স্ত্রীর ফেসবুকে ও মোবাইলে সেনা সদস্য পরিচয়ে অপরিচিত একজন বাজে কথা বলায় তার ভাই মনু গিয়াস উদ্দিনের কাছে জানতে গিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। কোনোভাবেই তার ভাই চাঁদা চায়নি বলে দাবি তার।মনুর স্ত্রী নিপু আক্তার দাবি করেন, তাকে মোবাইলে কেউ একজন বাজে কথা বলেছেন। সেটিই তার স্বামী (মনু) গিয়াস উদ্দিনের কাছে জানতে চেয়ে মারামারি হয়েছে দুজনের মধ্যে। সেসময় গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী স্ট্রোক করে হয়তো মারা গেছেন।
এদিকে, সোমবার দুপুরে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে গিয়ে দেখা যায় নিহত আফিয়া খানমের স্বামী, সন্তানরা শোকে যেন পাথর। কিছু সময় পরপর হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন স্বামী গিয়াস উদ্দিন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ নেবার জন্য স্বজনরা অপেক্ষার প্রহর গুনছে। সময় সংবাদের সাথে আলাপে নিহতের স্বজনরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেছেন।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমলেশ হালদার জানান, আসামিদের ধরতে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। দ্রুততম সময় অপরাধীদের ধরতে সক্ষম হবে বলে জানায় পুলিশ।
Leave a Reply