বরগুনায় স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে বোরকা পরিহিত এক নারী জুতাপেটা করেছেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সোমবার ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে। জুতাপেটার ভিডিওতে ওই নারীকে একটি কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ওই নেতার নাম মো. শাহ আলম। তিনি বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নলটোনা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক।তাকে একটি কক্ষে একজন নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়। একই কক্ষে উপস্থিত আকাশী টি শার্ট ও সাদা জামা পরিহিত দুই যুবককে শাহ আলম ও নারীর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
ওই নারীকে বলতে শোনা যায়, আমারে বিয়ার কথা কইয়া এই হানে ডাইকা আইনা আকাম করছে।শাহ আলম বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলে ওই নারী বলেন, আমার ফোনে রেকর্ড আছে, আপনারা শুনতে পারেন।পরে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে বিষয়টি গোপন রাখার প্রস্তাব দেন শাহ আলম। কিন্তু ওই নারী প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের বিয়ে পড়িয়ে দিতে বলেন।
ভিডিওর সূত্র ধরে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ৯ এপ্রিল রাত ৮টার পর বরগুনা পৌর শহরের ডিকেপি সড়কের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন না থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়নি।
আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহ আলম ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে এটা ঘটিয়েছে। তবে ওই নারীর সঙ্গে আমি কয়েকদিন কয়েকবার ফোনে কথা বললেও তাকে আমি চিনি না। ওই নারী ফোন করে ডিকেপি সড়কে আসতে বলে। আমি বাসার কাছাকাছি গেলে কয়েকজন যুবক আমার সামনে এসে বলে আপনি কোন বাসায় বেড়াতে যাবেন নাকি। তখন আমি হ্যাঁ সূচক জবাব দেই। এরপরই ওই যুবকরা আমাকে ওই নারীর বাসায় নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সেখানে গিয়ে দেখি অপর এক নারী একটি শিশু নিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর বোরকা পরিহিত এক নারী এসে আমার পাশে বসে। সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবকরা বাসায় ঢুকে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। সমস্ত শরীর দিয়ে ঘাম ঝড়তে থাকে। আমি পাঞ্জাবিটা খুলে ফেলি। এই ফাকে ওই যুবকরা আমার ছবি তুলে। ওই নারী আমাকে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকে। সেই ছবিও যুবকরা তুলে। আমার পকেটে ৬০ হাজার টাকা ছিল তাও যুবকরা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা ডিকেপি রোডে ওই নারীকে দিয়ে ফাঁদে ফেলার ভিডিও ধারণ ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া উদ্দেশ্য ছিল যুবকদের। আমার কাছে যুবকরা আরও টাকা চেয়েছে। আমি টাকা না দেওয়ায় ভিডিও ভাইরাল করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু গুরুতর অসুস্থ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ অলি বলেন, এ ব্যাপারে কেউ তো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা সদর থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply