অনলাইন ডেস্ক:::রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চ এবং পন্টুনের মধ্যে চাপা খেয়ে কবির হোসেনের প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বাম পাটি কেটে ফেলতে হয়েছে। আঘাত লেগেছে তাঁর ডান পায়েও। আরেক যাত্রী মো. শাহজালালের পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে তাঁর পায়ের আঘাত গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গতকাল রোববার সকালে ঈদযাত্রার সময় সদরঘাটে লঞ্চে ওঠার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মাঝে চাপা খেয়ে কবির হোসেনের বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে যায়। আর শাহজালালের ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে যায়।
কবির হোসেনের জামাতা দুলাল হাওলাদার বলেন, ‘রোববার সকালে আহত অবস্থায় তাঁকে (কবির হোসেন) প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর)-এ আনা হয়। এখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর একটি পা কেটে বাদ দেন চিকিৎসকেরা।’
দুলাল হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, ‘ঈদের ছুটি থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের স্বল্পতা রয়েছে।’ দুপুর ১২ টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় কবির হোসেনকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
এদিকে পায়ে আঘাত পাওয়া আরেক যাত্রী মো. শাহজালালকেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে নিটোরে। মুঠোফোনে তিনি বলেন, যাত্রীদের হুড়োহুড়ির মধ্যে পরে এই ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে পায়ের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে পায়ের আঘাত গুরুতর নয় বলে চিকিৎসকেরা তাঁকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এরপর বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে। তাঁর পরিবারের এবারের ঈদ হাসপাতালেই কাটবে বলে আক্ষেপ করেন শাহজালাল। তবে তিনি মনে করেন, বেঁচে থাকলে অনেক ঈদ করা যাবে। শাহজালাল একটি ব্যাটারি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে ডেলিভারিম্যানের চাকরি করেন।
গতকাল রোববার সকালে পটুয়াখালীগামী অনেক যাত্রী ঘাটে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এই নৌপথের পূবালী-১২ লঞ্চটি ঘাটে ভিড়তে শুরু করলে এতে ওঠার জন্য যাত্রীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। এ সময় লঞ্চ ও পন্টুনের মধ্যে পা আটকে যায় শাহজালাল ও কবিরের। পরে তাদের উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এমভি পূবালী-১২ লঞ্চের স্বত্বাধিকারী আজগর আলী বলেছেন, তিনি দুই যাত্রীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।
নৌ দুর্ঘটনায় যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের একটি নৌ দুর্যোগ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড রয়েছে। আহত যাত্রীরা এই তহবিল থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা বা সরকারের পক্ষ থেকে যাত্রীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা তা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)- এর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘সমস্ত চিকিৎসার দায়িত্ব লঞ্চ মালিক নিয়েছেন। আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় সাহায্য করব।’
Leave a Reply