ভোলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বুধবার (৩ আগস্ট) বিকালে দলটি এ কর্মসূচির ঘোষণা করে। এছাড়াও ৭ দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে জেলা বিএনপি।
হরতাল সফল করতে বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সন্ধ্যায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় টায়ার জালিয়ে বিক্ষোভ করে নেতাকর্মীরা। এসময় একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
তবে কোন ধরণের অরাজকতা সৃষ্টি না হয় সে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপি কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে সদর রোড প্রদক্ষিণ করে দলীয় অফিসের সামন এসে শেষ হয়। এসময় জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোপান, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, জেলা যুবল সভাপতি জামাল উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হাসান, বিএনপি নেতা কবির হাসান, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আমিন, বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম কাদের, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদল্লা আল রাসেল প্রমুখ।
সারাদেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার (৩১ জুলাই) ভোলায় আয়োজিত বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বাঁধা দেওয়ায় এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পুলিশ এবং বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন, যার মধ্যে অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আবদুর রহিম নিহত হন। একইদিন আহত হয়ে ঢাকা কমপ্যাথ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম। বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তিনি মারা যান। এ নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম ও সেচ্ছাসেবক দল কর্মী আবদুর রহিমের মৃত্যু হলো।
এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ভোলা জেলা বিএনপি আজ বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছেন। ভোলা জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি এই হরতাল সফল করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকার বলেন। এবং জনগনকে এই হরতাল সফল করতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম ও সেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিমকে পুলিশ গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
এসময় শতাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। আমরা দুইজন ত্যাগি ও রাজপথের লড়াকু সৈনিককে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। দলের জন্য তাদের এই ত্যাগ চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা এই হত্যাকান্ডের তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
এদিকে, এ সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা চার শতাধিক নেতাকর্মীর নামে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Leave a Reply