সরকারি কর্তাদের ১০ জনের স্ত্রী,১ জনের পুত্রের অবৈধ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি
অনুসন্ধান ডেস্ক–বরিশালের কাশিপুর তেতুলতলা নামক যায়গায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায় প্রায় এক একর সম্পত্তির মালিকদের আয়ের উৎস কি, এমন প্রশ্নের উদ্ভব থেকে শুরু হয় অনুসন্ধান।
অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে,সাবেক জমির মালিক স্থানীয় মালেক মুন্সি ওরফে মালেক মেম্বরের প্রায় এক একর জমিতে সরকারি প্রায় ১১ জন কর্তা বাবুদের স্ত্রীর নামে কেনা এই সম্পদ।এই কোটি টাকা জমির উপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল মুরগীর ফার্ম। ফার্মের কেয়ার টেকার থেকে শুরু করে প্রত্যেকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে আশঙ্কাজনকভাবে গাণিতিক হারে।সবাই রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন।
ব্রাউন্ড কম্পাউন্ডের মিজানুর রহমান।জানা যায়,মিজানুর রহমান এর জমির অংশ সবচে বেশী ওই বিতর্কিত জমিতে।মিজানুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন শুভ্র প্রকাশ দে;তার পিতার নাম চন্দন কুমার দে।তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশন ১৯ নং ওয়ার্ডের নাজির মহল্লার বাসিন্দা।তার কর্মস্থল জনতা ব্যাংক মেডিকেল কলেজ শাখা বরিশালে।শুভ্র সিনিয়র অফিসার এই শাখার। তার অর্জিত অবৈধভাবে জমি কাশিপুরে বর্তমানে ১২ শতাংশ বলে জানা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন পরিমাণে জমির মালিকদের নাম হল,নিজাম, কাশিপুর জোরা পুকুর পাড়ের বাসিন্দা।তিনি পিডিবির মিটার রিডার।মিজান(২),আলাউদ্দিন,শহিদুল ইসলাম শহিদ, বাউফলের বাসিন্দা, মৃত আবুল বাশার,বশির কাউনিয়ার বাসিন্দা,সাহগির, নড়াইলের বাসিন্দা,বাবলু,বাবুল
সহ প্রত্যেকের স্ত্রীরা কাগজকলমে এই জমির মালিক।
এদিকে,জমির নতুন ক্রেতা কাশিপুরের রুহুল আমিন ভূঁইয়ার ছেলে মো.মাসুদ ভূইয়া,আজিজ চৌকিদারের পুত্র জামাল ওরফে ইটভাঙ্গা জামাল। অভিযোগ রয়েছে,এদের নির্দিষ্ট কোন পেশা বা কোটি কোটি টাকা আয়ের কোন বৈধ উৎস নেই। মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা,সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ,সরকারি-বেসরকারি অসাধু কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অবৈধভাবে অর্জিত কালো টাকা সাদা করতে তাদের গোপনে রেখে তাদের টাকা জমিতে বিনিয়োগ করে থাকেন তারা।এরমধ্যে স্থানীয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও বিতর্কিত আ’লীগ নেতা ইমরান মোল্লার টাকা বিনিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
এজন্য তারা বর্তমানে একটি নামসর্বস্ব ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে। বরিশাল গ্রীণ সিটি ডেভেলপার্স নামের এই ব্যানারে চলে কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া;এমটাই অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
বরিশাল সদর সাব রেজিস্টার বরিশাল সহ অজ্ঞাত আরও ২০-২২ জন সহায়তাকারী বলে অভিযোগ করা হয় দুদকে লিখিতভাবে।
দুদকে করা অভিযোগসূত্রে ও অনুসন্ধানে আরও তথ্য পাওয়া যায়,২০০৫ সালে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের মাধ্যমে ইচ্ছেকৃতভাবে সম্পত্তিতে পরিণত করা হয় অবৈধ আয়কৃত অর্থকে।অর্থাৎ মানি লন্ডারিং এর একটি প্রক্রিয়া।
তৎকালীন জমির মালিকদের আয়ের উৎসের সাথে সম্পত্তি অর্জনের সামঞ্জস্যতা খুজে পাওয়া যায়না।কারন তারা সবাই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ত্রী ও একজন সরকারী কর্মকর্তার পুত্র। এই আলোচিত পুত্রের খোজ নিয়ে জানা যায় তিনি তখন ছিলেন একজন ছাত্র।
এছাড়াও এই সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে,
জ্ঞাত বহির্ভূত আয় অর্জন,প্রত্যেকের নামে বেনামে অঢেল সম্পদ অর্জন,বিদেশে দুর্নীতির টাকা পাচার করে রেমিটেন্স আকারে তা লেয়ারিং করে দেশে ফেরৎ আনা, সকলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হয়েও কতৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সম্পত্তি অর্জন,বোইনিভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে বছরের পর বছর দুর্নীতি ও অনিয়ম করা,২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বরিশাল সাব রেজিস্টারের অফিসের মাধ্যমে জমি বিক্রির বায়না রেজিস্ট্রিতে কোটি কোটি টাকার জমির প্রকৃত মূল্য গোপন করিয়া সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ।
অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে,কর্তাদের স্ত্রী ও পুত্র ২০০৫ সালে বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর টু বারোজিয়ার হাট রাম্তার পাশে দিয়াপাড়া মৌজায়, জেএল-১৪ তে (বাড়ি,ডোবা) তে,৩৭৮ নং খতিয়ান (সৃজিত- ৬০২) ১৭১/১৭২/১৭৩/১৭৪/১৭৫ সহ বিভিন্ন দাগে প্রায় ১ একর (+) সম্পত্তি অর্জন করেন।যার বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৫ কোটি টাকা।বিক্রির জন্য দাম হাকানো হইয়াছে আরও বেশী শতাংশ প্রতি ৭-৮ লাখ। কিন্তু সরকারি সাব রেজিস্টারের দুর্নীতির মাধ্যমে বিক্রির বায়না হয় প্রায় অর্ধেক দাম দেখিয়ে।বায়নাটি গত সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি করেন সদর সাব রেজিস্টার।
মিজানুর রহমানকে জানতে চাইলে তিনি বলেন’ আমি জমির পাওয়ার নিয়ে বিক্রি করেছি।বাকি তথ্য সরকারি সংস্থা খুজবে,আপনাদের এত সমস্যা কেন? ‘
শুভ্র প্রকাশ দে’র দুর্নীতির বিষয়ে এবং সম্পত্তি অর্জনের বিষয়ে জনতা ব্যাংকের মেডিকেল কলেজ শাখায় লিখিতভাবে তথ্য জানতে চাইলে এ রিপোর্ট করা পর্যন্ত কোন উত্তর দেয়নি কতৃপক্ষ।
Leave a Reply