❏ দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত রিপোর্টের পরও একই স্থানে চাকুরী করছেন সুলতানা
❏ দুদক জিজ্ঞাসাবাদেই ছিল সীমাবদ্ধ
❏ একজন মন্ত্রীর সুপারিশে টিকে আছেন দুর্নীতিবাজ সুলতানা খানম
❏সরকারি অর্থআত্মসাৎ,অসদাচরণ,সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ছিল তদন্ত রিপোর্টে।
স্টাফ রিপোর্টার।। পিরোজপুরের জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী সুলতানা খানমের বিরুদ্ধে বহু দুর্নীতি,অনিয়মের অভিযোগের পর ২০২০ সালে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে ১৫৮৯ নং স্মারকের মাধ্যমে তদন্ত করে কতৃপক্ষ।অথচ,তদন্তে দুর্নীতি,অর্থ আত্মসাৎ এর প্রমাণ পেলেও একই কর্মস্থলে একইভাবে বহাত তবিয়তে রয়েছেন তিনি।এতে ডিপার্টমেন্টে এবং জনমনে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের।
তদন্ত রিপোর্ট বলছে,২০২০ সালের ৩১ তারিখ অভিযুক্তদের বক্তব্য সংগ্রহ ও তদন্ত শুরু করেন তদন্ত কর্মকর্তা বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সহকারী রসায়নবিদ মোহাম্মদ বোরহানউদ্দিন। তিনি তার তদন্ত রিপোর্টে লেখেন যে,২০১৮ সালে পিরোজপুর জেলায় দুইবার উন্নয়ন মেলা হয়।প্রথমবার পিরোজপুর খাদ্য জেলা খাদ্য অফিসসহ(সদর বাদে)৬ টি উপজেলার জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়।তার মধ্যে ৪৯,৮৯০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে বিল ভাউচার দেখিয়ে।আবার ২য় বার পিরোজপুর খাদ্য জেলা খাদ্য অফিসসহ(সদর বাদে)৬ টি উপজেলার জন্য ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয় এরমধ্যে ৪৪,৯৯০ টাকা উত্তোলন হয় সেখানে ব্যপক টাকা আত্মসাৎ প্রমাণ হয় এবং এতে প্রদান সহকারী সুলতানা খানমের সংশ্লিষ্টতা পায় তদন্ত কর্মকর্তা।
রিপোর্টে জানা যায়,করোনা ভাইরাম মহামারীর কারনে জেলায় বিশেষ ওএমএস কর্মসূচির ১০,৫০০ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এছাড়াও সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করে সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি এবং এতে তার জড়িত থাকার বিষয় নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা।
তদন্ত কর্মকর্তা রিপোর্টে আরও উল্লেখ করেন যে,পিরোজপুর অফিস ভবনের ২০১৯-২০ অর্থবছরের ভাড়া বাবদ ১,৭৬,৯৫১ টাকা সোনালী ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনুযায়ী ২৯ জুন ২,৭০,৬৮৫ টাকা বিলবোর্ডের টাকাসহ উত্তোলন করা হয়েছে।অথচ,২৫ দিন ধরে টাকা হস্তমজুদ করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।এবং এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সামনে মিথ্যা সাক্ষী দিতে অফিস সহায়ক আবুল কালামকে ভয়ভীতি দেখান দুর্নীতিবাজ সুলতানা খানম।
উচ্চমান সহকারী মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন যে,তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বারবার বললেও ক্ষমতা দেখিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন না সুলতানা খামন;অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত টিম।
রিপোর্ট বলে,অভ্যন্তরীণ আমন/২০১৮-১৯ চাল সংগ্রহের মেসার্স কাওসার আহমেদ চিংগুরিয়া,ভান্ডারিয়া,পিরোজপুর এর জামানতের পে-অর্ডার অবমুক্তিতে রেজিস্টার জেলা খাদ্য কর্মকর্তার সাক্ষর নাই।তবে,অর্ডারটি নিয়ে গেছে। বোরো/২০১৮ চাল সংগ্রহকালে মেসার্স ভাইভাই রাইস মিল,নামাজপুর,পিরোজপুর এর সাথে পুন: বরাদ্দকালে কোন চুক্তিপত্র হয়নি।তবে পে-অর্ডার অবমুক্ত করা হয়।এ কাজেও তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
এছাড়াও,সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অধীনস্থ কর্মচারীর তথ্য না দিয়ে উত্থাপিত প্রশ্নপত্র ছিড়ে ফেলা,চাকুরীর শুরু থেকে ১০ বছর ধরে একই পদে একই স্খানে থাকায় একটা নিজস্ব আবহমান শক্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করেন তিনি।তিনি নিজের পছন্দমত নথিপত্র নিজের আয়ত্তে রাখেন,সহকর্মীদের অবমূল্যায়ন করেন,দাম্ভিক আচরন করেন বলে জানা যায় ওই রিপোর্ট থেকে। রিপোর্টে তাকে দ্রুত বদলি ও শাস্তির সুপারিশ করা হয়।
এতকিছুর পরও কিভাবে বহাল তবিয়তে রয়েছেন সুলতানা খানম, এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানতে চেয়েও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি আঞ্চলিক কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সুলতানা খানম বলেন’তদন্ত রিপোর্ট আপনারা কোথায় পেলেন? আমি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদেও ভয় পাইনি। আমার বিষয়ে উর্ধতন কর্মকর্তা জানেন।
Leave a Reply