ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি)। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গরুর মালিক ও খামারিরা। এ রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে জ্বর উঠে যায়। তারপর শরীরের কয়েক জায়গায় গুটি উঠতে শুরু করে। অল্প দিনের মধ্যে সারা শরীরেই গুটি ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় গরুর মুখ দিয়ে লালা পড়া শুরু হয়। গরুর খাবারে অনীহা দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে দুর্বল হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
জানা যায়, উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামে এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই রোগের ফলে গরু থেকে মাংস ও দুধ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। তবে এ রোগ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি দ্রম্নত রেজিস্ট্রারপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে গরুর মৃত্যু রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছে প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এদিকে লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুভার্বে কত সংখ্যক গরু আক্রান্ত বা মৃত্যু হয়েছে তার সঠিক কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান দিতে পারেননি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
উপজেলার একাধিক খামারি ও কৃষকরা বলেন, এ রোগে আক্রান্ত গরুর সঠিক চিকিৎসা তারা পাচ্ছেন না। চোখের সামনে চিকিৎসার অভাবে তাদের গবাদিপশুর মৃত্যু হচ্ছে। এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই নেই।
রসুলপুর ইউনিয়নের প্রান্তিক খামারি কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার খামারে ছয়টি গরুর মধ্যে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়েছে তিনটি। চিকিৎসকের পরামর্শে একটি সুস্থ হয়েছে। বাকি দুইটি গরুর একটি এখনো আক্রান্ত অন্যটি বাঁচাতে পারিনি।’
জিন্নাগড় এলাকার কৃষক কামাল মিঝি বলেন, ‘আমার একটি মাত্র বাছুর গরু ছিল, যা লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার মারা গেছে।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ভেটেরিনারি সার্জন ডাক্তার রহমত উলস্নাহ বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাস গঠিত রোগ। তাই এ রোগের সরাসরি কোনো চিকিৎসা নেই। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধ করার জন্য লক্ষণ দেখে চিকিৎসা প্রয়োগ করতে হয়। মশা-মাছি ও ডাশজাতীয় রক্ত খায় এমন পতঙ্গের মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে এ রোগ অল্প সময়ে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের বিস্তার বন্ধে খামারি ও কৃষকদের গরুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা এবং মশা, মাছি ও ডাশের কামড় থেকে বাঁচাতে মশারি ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply