বরিশাল:: বরিশালের আলোচিত মাদকবিক্রেতা জেসমিনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার রাতে শহরের নগরীর হাখোলা স্থান থেকে জেসমিনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় ডিবি। এ সময় তার কাছ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। কাউনিয়া থানা আওতাধীন আলোচ্চ্য এই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের খবর এলাকাবাসীকে স্বস্তি দিয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, ওই এলাকার একজন নারী মাদকবিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করতে সোমবার রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ছগির হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে অবস্থান করে। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও সেই নারীর বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ১০০পিস ইয়াবা উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গুচ্ছগ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে রিপন সরদার ও তার স্ত্রাী জেসমিন আক্তার (৩০) দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক বেঁচা-বিক্রিসহ বহুমুখী অপরাধ করে আসছিলেন। ইতিপূর্বে কাউনিয়া এবং কোতয়ালি থানা পুলিশ কয়েকবার মাদকসহ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালেও তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে ফের এলাকায় এসে একই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
জেসমিন ও তার স্বামী রিপন সরদার স্থানীয় সকলের কাছে মাদকের সাব-ডিলার হিসেবে পরিচিত, তিনি শহরের ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডস্থ রসুলপুরও কেডিসি এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাইকারী কিনে ক্রয় পরবর্তী তা খুচরা বিক্রি করেন থাকেন। এই তথ্য পুলিশ প্রশাসন এবং এলাকাবাসী অবগত থাকলেও ধুরন্ধর জেসমিনের লাগাম টানা যাচ্ছিলো না।
ডিবি পুলিশ জানায়, বরিশালে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সোমবার রাতে তাদের একটি টিম নগরীর হাটখোলার মোড়ে অবস্থান নিয়ে জেসমিন নামক নারী মাদকবিক্রেতাকে ধরার টার্গেট নেয়। কিন্তু অনেক সময় অবধি অপেক্ষার পরে নারী মাদক ব্যবসায়ীর খোঁজ পাওয়া না গেলেও অনেকটা কাকতালীয়ভাবে ধরা পড়েন জেসমিন আক্তার।
গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ছগীর হোসেন বরিশালটাইমসকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। এবং তিনি জানান, গ্রেপ্তার জেসমিন একজন চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা, কিন্তু তাকে কৌশল মতো পাওয়া যাচ্ছিলো না। সোমবার রাতে অভিযানে কাকতালীয়ভাবে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার কাছ থেকে ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কোতয়ালি থানায় মামলা দায়ের পরবর্তী মঙ্গলবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, জেসমিনের বয়স বেশি না হলেও তিনি মাদক বিক্রিতে বেশ পটু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কী ভাবে বাণিজ্য চালাতে হয় তার কৌশল ভালোই জানেন, বোঝেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না! অপরাধ করে যে পার পাওয়া যায় না ডিবি পুলিশের অভিযানে তা আরেকবার প্রতীয়মাণ হলো।
স্থানীয় একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জেসমিনও তার স্বামী রিপন সরদার এর আগেও একাধিকবার মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন, খেটেছেন জেলও। কিন্তু মোটেও তিনি শোধরাননি, বরং মাদকের দেদার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সোমবার রাতে তাকে ফের গ্রেপ্তারের খবর এলাকার বাসিন্দাদের প্রশান্তি দিয়েছে। এবং এলাকাবাসীর তরফ থেকে দাবি উঠেছে, এই জেসমিনের সহযোগীসহ বাকি সকল মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং মাদক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে। চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা এখন অপরাপর মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা শুরু করবে কী না
গত ২ সেপ্টেম্বর শনিবার কাউনিয়া থানার পুলিশ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭নং গুচ্ছগ্রাম এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে তিন হাজার ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ সময় রিপন সরদার ও তার স্বজনরা দুই পুলিশের ওপর হামলা করে ওই ঘটনায় নারী-পুরুষসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়।’
Leave a Reply